[১৯ জানুয়ারি ২০১৫ - TopicsExpress



          

[১৯ জানুয়ারি ২০১৫ অ্যামেরিকাতে মার্টিন লুথার কিং বা MLK দিবস। এই দিন কৃষ্ণাঙ্গদের মানবাধিকার রক্ষায় ডঃ মার্টিন লুথার কিং-এর অবদানকে স্মরন করা হয়। বাংলাদেশের বন্ধুরা হয়তো জানেন না, শুধু গায়ের রঙের কারনে কি ভীষণ বর্ণবাদের স্বীকার হতে হয়েছিল কিছু মানুষকে। এই লেখাটা পড়ার পর আশাকরি পাত্রীর গায়ের রং কিরকম, সেটা নিয়ে প্রশ্ন করার আগে চিন্তা করবেন। যারা অ্যামেরিকাতে পড়তে আসবে, বা অ্যামেরিকা নিয়ে জানতে আগ্রহী তাদেরো কাজে লাগতে পারে লেখাটা । যেহেতু বর্ণবাদের ওপর লেখা, তাই অনেক জায়গায় “কালো” শব্দটা ব্যাবহার করা হয়েছে। Black যদিও অ্যামেরিকাতে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে, African American বেশি প্রচলিত। Negro কানে লাগে, এবং এর কাছাকাছি একটি শব্দ একটি কুৎসিত গালি—যার ব্যাবহার আপনার প্রান সংশয় করতে পারে। র‍্যাপ গানে যতই শুনুন না কেন, ‘নি’ আদ্যক্ষরের সেই শব্দটি অ্যামেরিকায় এলে ভুলেও উচ্চারন করবেন না।] অ্যামেরিকা আসলে পঞ্চাশটা দেশ। এই কথাটা অ্যামেরিকার বাইরে যারা থাকেন, “যুক্তরাষ্ট্র” নামটা জানলেও ঠিক উপলব্ধি করেন না। ম্যাসাচুসেটস এর সাথে মিসিসিপি, বা ভারমন্টের সাথে ভার্জিনিয়ার মানসিক পার্থক্য অনেক বড়। এখানে অনেক স্টেট আছে, যেখানে গ্রোসারিতে রাইফেল বিক্রি হয়। এখানে বন্দুক রাখতে লাইসেন্স লাগে না, কিন্তু কুকুর পালতে লাইসেন্স লাগে। বিভিন্ন স্টেটের এই পার্থক্যের সবচাইতে বড় উদাহরন, কালো মানুষদের প্রতি তাদের অতীত এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্তমান ব্যাবহার। অ্যামেরিকায় দাসত্বের ইতিহাস অ্যামেরিকার চাইতেও আগের। ১৭৭৬ সাতে যখন অ্যামেরিকা ইংল্যান্ডের কাছ থেকে স্বাধীন হয়, তখনি সেখানে আফ্রিকা ধরে থেকে আনা অনেক ক্রীতদাস। কিন্তু স্বাধীনতার যুদ্ধের পর অ্যামেরিকার উত্তরের স্টেট গুলিতে ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেয়ার ধারা শুরু হয়, আর দক্ষিনের স্টেটগুলি তাদের তুলা চাষের জন্য ক্রীতদাসদের ওপর আরো নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এই উত্তর-দক্ষিন বিভাজন আজো হালকা ভাবে বর্তমান। ১৭৮৭ সালে অ্যামেরিকার শাসনতন্ত্র (Constitution) লেখার সময় লজ্জাজনক একটি আপোশ করা হয়। ক্রীতদাসদের ভোট দেয়ার অধিকার ছিল না, কিন্তু দক্ষিনের ক্রীতদাসদের মালিকরা কংগ্রেসে বেশি আসন পাওয়ার জন্য দাবী করে, ক্রীতদাসদেরও গননা করতে হবে, কিন্তু ট্যাক্স কম দেয়ার জন্য তাদের সংখ্যা কমিয়ে দিতে চায়। তাই অ্যামেরিকার শাসনতন্ত্রে লেখা হয়ে যায়, একজন ক্রীতদাস তিন-পঞ্চমাংস মানুষ। Article 1, Section 2, Paragraph 3 of the United States Constitution which reads: Representatives and direct Taxes shall be apportioned among the several States which may be included within this Union, according to their respective Numbers, which shall be determined by adding to the whole Number of free Persons, including those bound to Service for a Term of Years, and excluding Indians not taxed, three fifths of all other Persons. ক্রীতদাসদের ওপর অত্যাচারের যে বর্ণনা আমরা সিনেমায় দেখি বা বইয়ে পড়ি, তা অতিরঞ্জিত নয়। তাই তারা বার বার বিদ্রোহ করে, এবং নিষ্ঠুর ভাবে তা বার বার দমন করা হয়। লিঙ্কন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে ১৮৬০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর দক্ষিনের সাতটা স্টেট আলাদা হয়ে Confederate States of America নামে একটি নতুন দেশের ঘোষণা দেয়। তাদের সাথে পরে আরো ছয়টি স্টেট যোগ দেয়। শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। কিন্তু অ্যামেরিকার গৃহযুদ্ধ ক্রীতদাস প্রথা নিয়ে শুরু হয় নি—এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল অর্থনীতির কারনে। উত্তরের ধনীরা চাচ্ছিল দক্ষিনের খোলা বাজার, সস্তা জমি, আর দক্ষিনের ক্রীতদাস মালিকরা সেটাতে রাজি ছিল না, এবং তারা ধরে নেয় যে লিঙ্কন প্রেসিডেন্ট হলে উত্তরের আশা পুরন হবে। তাই Confederate States of America র জন্ম হয়। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর ছয় লাখ মৃত্যুর পর শেষ পর্যন্ত জয় হয় উত্তরের, আর ১৮৬৫ সালে আব্রাহাম লিঙ্কন ক্রীতদাসদের মুক্ত ঘোষণার করেন। ১৮৬৮ সালে সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে সেই তিন-পঞ্চমাংস মানুষের লজ্জা থেকে অ্যামেরিকা মুক্ত হয়। তবে জেনে রাখা ভাল, লিঙ্কন মহাপুরুষ ছিলেন না। নির্বাচনের ২ মাস আগেও তিনি ক্রীতদাসদের প্রশ্নে আপোষ করতে রাজি ছিলেন। যুদ্ধেও লিঙ্কনের একটা চালাকি ছিল। ১৮৬২ সালে তিনি ঘোষণা করেন, যে ক্রীতদাসরা দক্ষিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, তারা মুক্ত হয়ে যাবে। তাই অনেক ক্রীতদাস পালিয়ে এসে উত্তরের পক্ষে যুদ্ধ করে। এতে করে উত্তরের শক্তি বৃদ্ধি হয়, আরো ক্রীতদাসরা আসে, এবং এইভাবে উত্তর ক্রীতদাসদের মুক্তির পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু কাগজের মুক্তি আর বাস্তবের মধ্যে অনেক ফারাক। মাত্র কয়েক মাস আগেও অ্যামেরিকার দুইটা শহর বারুদের মত বিস্ফোরণের পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছিল কারন মিসিসিপির ফারগুসন, আর নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ডে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাতে দুই নিরস্ত্র কালো মানুষের হত্যার বিচার চাইছিল। যুদ্ধে হেরে গিয়ে দক্ষিনের স্টেটগুলি আবার যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিল ঠিকই, কিন্তু কিছু বর্ণবাদী তাদের পরাজয় মানতে পারলো না। তারা কালোদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত রাখলো। ১৯৩০ সালে ল্যাংস্টন হিউজ লিখলেনঃ পিছিয়ে যাওয়া স্বপ্ন কি করে? সেটা কি কিসমিসের মত শুকিয়ে যায়, নাকি ক্ষতের মত বাড়তে থাকে? সেটা থেকে কি পুজ বের হয়, না শুকিয়ে ভাল হয়ে যায়? নাকি সেটা বিস্ফোরিত হয়? সাদা আর কালোদের আলাদা স্কুল, আলাদা বাথরুম, এমনকি বাসেও সাদা আর কালোদের আলাদা সিট। এই ছিল দক্ষিনের চেহারা। ১৮৯৬ সালের Plessy v. Ferguson মামলায় সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে সাদা আর কালোদের “সমান কিন্তু আলাদা” (Separate but equal) নামের এই প্রহসন করে কালোদের আরো দমিয়ে রাখা হচ্ছিল। [ en.wikipedia.org/wiki/Plessy_v._Ferguson ] National Association for the Advancement of Colored People (NAACP) নামে একটি সংগঠন একের পর এক মামলা করতে থাকে, এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৫৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট স্কুলে “সমান কিন্তু আলাদা” কে সংবিধানের পরিপন্থী বলে রায় দেয়। [ www3.evergreen.edu/events/brownvboard/about-brown.html ] তার পরও আরো দশ বছর লাগে সেই রায় পুরোপুরি কার্যকর হতে। ১৯৫৫ সালে রোসা পার্কস নামে এক কালো মহিলা অ্যালাব্যামার মন্টগোমারি শহরে সাদাদের জন্য নির্দিষ্ট সিটে বসে পড়েন। তিনি পরে বলেনঃ Well, in the first place, I had been working all day on the job. I was quite tired after spending a full day working. I handle and work on clothing that white people wear. That didnt come in my mind but this is what I wanted to know: when and how would we ever determine our rights as human beings? ... It just happened that the driver made a demand and I just didnt feel like obeying his demand. He called a policeman and I was arrested and placed in jail.... মন্টগোমারি জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। কালোদের চার্চে বোমা পড়ে। ডঃ মারটিন লুথার কিং, ২৭ বছরের তরুণ এক পাদ্রী এই প্রতিবাদের একজন নেতা ছিলেন। তার বাসাতেও গুলি করা হয়। ১৯৫৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট বাসে “সমান কিন্তু আলাদা” কে সংবিধানের পরিপন্থী বলে রায় দেয়। দক্ষিনের বর্ণবাদী সাদারা আরেকটা চালাকি করে। তারা কালোদের ভোটার তালিকাতে নাম তুলতে বাধা দিতে থাকে। এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও কালো ভোটারদের গুলি করা ভয় দেখায়। উত্তর থেকে এই সময় কিছু স্বেচ্ছাসেবক (সাদা এবং কাল) বাস ভর্তি করে গিয়ে এই ভোটার রেজিস্ট্রেশনে সাহায্য করে। পুলিশের সামনেই তাদের পেটানো হয়, এবং এক পর্যায়ে তিন জন স্বেচ্ছাসেবককে (একজন কালো, দুই জন সাদা) মেরে লাশ পুতে ফেলা হয়। (আগ্রহ থাকলে Mississippi Burning দেখতে পারেন imdb/title/tt0095647/ ] ১৯৬০ সালে ছয় বছর বয়সের রুবি ব্রিজেস লুইসিয়ানায় প্রথম কালো বাচ্চা যে সাদাদের স্কুলে যায়। চারজন ফেডারেল মার্শাল তাকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়, নয়তো বর্ণবাদীরা তাকে মেরে ফেলতে পারতো। স্থানীয় পুলিশ তাকে রক্ষা করতে অসম্মতি জানায়। রাস্তায় রুবি দেখতে পারেন, একজন সাদা মহিলা একটা কফিনে একটা কালো বাচ্চা পুতুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রুবির কাছে সেই বয়সেও ইঙ্গিতটা পরিষ্কার ছিল। [ en.wikipedia.org/wiki/Ruby_Bridges ] অনেক সাদা মা-বাবা তাদের বাচ্চাদের সেই স্কুল থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। এমনকি অনেক শিক্ষকরাও রুবিকে পড়াতে রাজি ছিলেন না। একজন মাত্র শিক্ষিকা তাকে পড়াতে রাজি হয়েছিলেন। রুবির বাবার চাকরি চলে যায় এই সাহস দেখানোর জন্য। তার মাকে বলা হয়, পাড়ার দোকানে তিনি আর যেতে পারবেন না। এই ধরনের ঘটনা সারা দক্ষিন জুড়ে ঘটতে থাকে। ডঃ কিং গান্ধীর অহিংস নীতির ভক্ত ছিলেন। তাই তার আন্দোলনে অহিংসতার ওপর জোর দেয়া হয়। কিন্তু সব কালোরা সেই বাণীতে বিশ্বাসী ছিল না। ম্যালকম এক্স, ব্ল্যাক প্যান্থার এবং আরো কিছু দল সহিংস আন্দোলন শুরু করেছিল। কিন্তু এই নাগরিক অধিকার আন্দোলনে ডঃ কিং অবিসংবাদিত নেতা। তার অমর বক্তৃতার কিছু অংশ তুলে দিচ্ছিঃ I have a dream that one day this nation will rise up and live out the true meaning of its creed: We hold these truths to be self-evident, that all men are created equal. I have a dream that one day on the red hills of Georgia, the sons of former slaves and the sons of former slave owners will be able to sit down together at the table of brotherhood. I have a dream that one day even the state of Mississippi, a state sweltering with the heat of injustice, sweltering with the heat of oppression, will be transformed into an oasis of freedom and justice. I have a dream that my four little children will one day live in a nation where they will not be judged by the color of their skin but by the content of their character. I have a dream today! I have a dream that one day, down in Alabama, with its vicious racists, with its governor having his lips dripping with the words of interposition and nullification -- one day right there in Alabama little black boys and black girls will be able to join hands with little white boys and white girls as sisters and brothers. এর মধ্যে আরো সংঘাত হয়। এক কালো ছাত্রকে ইউনিভার্সিটি অফ মিসিসিপি (অক্সফোর্ড) এ ফেডারেল মার্শালদের পাহারা দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। চারদিক থেকে তার ওপর বর্ণবাদীরা আক্রমন করতে থাকে। অ্যালাব্যামার বিভিন্ন শহরে কালোদের ওপর কুকুর লেলিয়ে দেয় পুলিশ। ১৯৬৮ সালে ডঃ কিং আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। তার জন্মদিন এখন অ্যামেরিকার জাতীয় ছুটি, কিন্তু অনেক স্টেট বহুদিন চেষ্টা করেছে এই ছুটি না মানতে। ২০০০ সালে সাউথ ক্যারোলাইনা শেষ স্টেট হিসাবে এই ছুটি মেনে নেয়। লিঙ্কনের দেড়শ বছর পর, রুবি ব্রিজেসের ৫৫ বছর পর, অ্যামেরিকার চেহারা অনেক বদলে গিয়েছে। কিন্তু আজো কালোরা পেছনে পড়ে আছে, আজো দামী গাড়ি চালাতে দেখলে অনেক জায়গায় কালোদের পুলিশ বিনা কারনে থামায়। আজো পুলিশের গুলিতে নিরীহ, নিরস্ত্র কালোরা মারা যায়। সেটা শুধু দক্ষিনেই না, উত্তরেও। আজকে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট একজন কালো মানুষ। তার বিরুদ্ধেও কিছু সাদাদের বর্ণবাদী মন্তব্য গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা বাংলাদেশীরা, যারা আজ অ্যামেরিকাতে আছি, তারাও মারটিন লুথার কিং আর তার সহযোদ্ধাদের কাছে ঋণী। রোসা পার্কস আর রুবি ব্রিজেসের সাহস না থাকলে আজকে আমাদের কি অবস্থা হতো অ্যামেরিকাতে? অ্যালাব্যামা, জর্জিয়া আর মিসিসিপিতে, সাউথ ক্যারোলাইনার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি ছাত্ররা কি আদৌ ভর্তি হতে পারতো? কালো কবি ল্যাংস্টন হিউজের আরেকটা কবিতা দিয়ে শেষ করিঃ I, too, sing America. I am the darker brother. They send me to eat in the kitchen When company comes, But I laugh, And eat well, And grow strong. Tomorrow, I’ll be at the table When company comes. Nobody’ll dare Say to me, “Eat in the kitchen, Then. Besides, They’ll see how beautiful I am And be ashamed— I, too, am America. মানুষের জয় হোক। গায়ের রং নয়, চরিত্র দিয়ে বিচার হোক তাদের। ছবিঃ ১, ২] বারমিংহাম, অ্যালাব্যামা তে প্রতিবাদের সময় পুলিশ কুকুর লেলিয়ে দেয় ৩] সাদা আর কালো মানুষদের জন্য আলাদা পানির ব্যাবস্থা ৪] রুবি ব্রিজেস কে স্কুল থেকে বাসায় পাহারা দিয়ে নিয়ে আসছে ফেডারেল মার্শালরা। দরজার পেছনে স্থানীয় পুলিশের মুখে স্পষ্ট বিদ্রুপের ছাপ
Posted on: Mon, 19 Jan 2015 03:45:12 +0000

Trending Topics



�ex-candidate du FN
THOUGHT FOR THE DAY RIGHT ATTITUDE As is one’s attitude so
ight:30px;">
God, grant me the serenity to accept the things I cannot change,
KARAN PATEL GETS THE WILD CARD Jhalak Dikhla Ja season 6 recently
I have a lot for sale 3&1 white crib $60 a stroler baby

Recently Viewed Topics




© 2015