৩৭২ বছরের ইতিহাস - হোসেনী - TopicsExpress



          

৩৭২ বছরের ইতিহাস - হোসেনী দালান মহানগরীর ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হোসেনী দালান। মহররম মাস এলে নিদর্শনটির গুরুত্ব যেন বেড়ে যায় কয়েক গুণ। আসা-যাওয়া শুরু হয় প্রচুর বিভিন্ন ধর্মের মানুষের। মহররম মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ আশুরার দিন সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। উপমহাদেশের প্রাচীনতম ইমামবাড়া ঢাকার হোসেনী দালান। জানা যায়, এটি নির্মিত হয় ১৬৪২ সালে সুবেদার শাহ সুজার শাসনামলে। লোক মুখে শোনা যায়, শাহ সুজার নৌবহরের এক অধিনায়ক (মীর মুরাদ) এ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। তার পরপরই নির্মিত হয় হোসেনী দালান। এটি নির্মিত হয় মূলত কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মরণে এবং হযরত ইমাম হোসেনের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই। জানা গেছে, ধর্মপ্রাণ শিয়া ছিলেন মীর মুরাদ। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, প্রথমদিকে এখানে ছিল ছোট আকারের স্থাপনা। পরবর্তীকালে প্রয়োজনের তাগিদে চলে এর সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজ। এসবেরই ধারাবাহিকতায় এটি রূপ নেয় বড় স্থাপনায়। স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে। তখন এর সংস্কার করেন নবাব আহসান উল্লাহ। আর বর্তমান কাঠামোটি নির্মাণ করা হয় গত শতকের গোড়ার দিকে বৃটিশ সরকারের সময়। এটি নির্মিত হয় প্রায় ছয় বিঘা জমির ওপর। এখানে দেখতে পাওয়া যায় মনোরম একটি দ্বিতল ভবন। এর উত্তরে রয়েছে প্রশস্ত চত্বর, আর দক্ষিণদিকে পুকুর। পশ্চিমে রয়েছে তাজিয়া ঘর, সামনে দেউড়ি ও দ্বিতল নহবতখানা ইত্যাদি। সম্প্রতি সাজসজ্জায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে ঐতিহাসিক এই স্থাপনার অভ্যন্তরে ও বাইরে। এতসব পরিবর্তন মানেই পুরনো বা আসল ঐতিহ্যে কুঠারাঘাত। এক সময় এর ভেতরে রং-বেরঙের নকশা করা কাঁচ দেখা যেতো। তাতে এর সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছিল। এখন অবশ্য তা পরিবর্তন করে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন আয়াত ও মুদ্রা লিখিত নীল রঙের টাইলস। একইভাবে আয়াত ও সূরা লিখিত নীল রঙের টাইলস লাগানো হয়েছে এর পূর্ব দিকের ফটকে এবং উত্তরদিকের থামগুলোতে (চৌকোনা)। ফলে পরিবর্তন এসেছে ঐতিহাসিক হোসেনী দালানের আদি চেহারায়। অনেকে বলছেন, এর আদি চেহারার পরিবর্তন করা উচিত হয়নি। একটি সূত্রে বলা হয়েছে, হোসেনী দালানে এসব টাইলস লাগানো হয়েছে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে। এ টাইলস লাগানো হয় তাদের লোকজনদের হাতে। ঢাকার হেরিটেজ রক্ষা আন্দোলনের অনেকে অবশ্য বলেছেন, সংস্কারের মাধ্যমে এতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু বেশিই করা হয়েছে, যা না করলেও চলতো। কেননা, এতে আছে মোগল স্থাপত্যের সংমিশ্রণ। এতে যোগ করা হয়েছে ইরানি কিংবা পারস্য স্থাপত্য বা সংস্কৃতিও। অনেকের দাবি, এর ব্যাপক পরিবর্তন না ঘটিয়ে প্রয়োজনের খাতিরে সংস্কার কাজ হোক।
Posted on: Sun, 26 Oct 2014 08:23:46 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015