......৪র্থ কিস্তি কুরআনে - TopicsExpress



          

......৪র্থ কিস্তি কুরআনে বৈজ্ঞানিক ও গাণিতিক ইঙ্গিতসমূহ: ৯। আকাশের চক্রশীলতা বা পর্যায়বৃত্ততা : "শপথ চক্রশীল আকাশের এবং বিদারণশীল পৃথিবীর"। (সূরা তারিক:১১-১২) আমাদের বায়ুমন্ডল সাতটি স্তরে বিভক্ত। প্রত্যেকটি স্তর কিছু ভিন্ন চক্র সম্পূর্ণ করতে কাজ করে। এই যেমন- ট্রপোস্ফিয়ার : তের থেকে পনের কিলোমিটার উর্দ্ধে অবস্তিত। বায়ু থেকে জলীয় বাস্পকে ঠান্ডা করে বৃষ্টির ফোঁটা তৈরী করে। এভাবে পানিকে আবার পৃথিবীতে পাঠাতে সাহায্য করে। এভাবে পানি চক্র পূর্ণতা পায়। এই স্তর না থাকলে পৃথিবী সম্পূর্ণ শুস্ক ও অন্ধকার থাকতো। ওজোন স্তর : ২৫ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি ও রেডিও রশ্মি থেকে পৃথিবীকে বাঁচতে সাহায্য করে। এই রশ্মিগুলোকে পুনরায় মহাকাশে পাঠিয়ে দেয়। আয়নোস্ফিয়ার : পৃথিবী হতে পাঠানো বিভিন্ন রেডিও ওয়েভ আবার পৃথিবীতে ফেরত পাঠাতে সাহায্য করে। যা দ্বারা রেডিও ও টেলিভিশন সিস্টেম কাজ করছে। ................................................বাকীগুলো আর লিখলাম না। ১০। সাত আসমান : "তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি সৃষ্টি করেছেন, যা কিছু যমিনে রয়েছে সেই সমস্ত, অতপর তিনি মনোযোগ দিয়েছেন আকাশের প্রতি। বস্তুত তিনি তৈরী করেছেন সাত আসমান। আল্লাহ সর্ববিষয়ে অবহিত"। (সূরা বাকারাহ:২৯) আমাদের মাথার উপরের আকাশ অর্থাৎ বায়ুমন্ডল সাতটি বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত। এটা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। এই কিছুদিন আগে বিংশ শতাব্দির আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা ইহা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানীত হয়েছে। কোরআনে দেড় হাজার বাছর আগে এই সাতটি স্তরের কথাই এভাবে বলেছে!খুবই বিষ্ময়কর। এই সাতটি স্তরের নামগুলো এরকম- ট্রাপোস্ফিয়ার, স্ট্রাটোস্ফিয়ার, ওযনোস্ফিয়ার, মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার, আয়নোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিযার। ১১। ভূমির সাতটি স্তর : "তিনিই আল্লাহ যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং পৃথিবী সেই একই পরিমানে"। (সূরা তারেক:১২) আয়াতটি আমাদের কি বলছে ? আয়াতটি আমাদের বলছে শুধু আসমানই নয় বরং পৃথিবীরও সাতটি স্তর রয়েছে। মোহাম্মদ (স তখনকার দিনে কিভাবে একথা বলতে পারেন!যখন মানুষ পৃথিবীর ব্যাসার্ধ নির্ণয় করাই শেখেনি ? আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে এর উপরিভাগ পর্যন্ত সাতটি স্তর রয়েছে। গঠনগত এবং কার্যগত দিক থেকে একটার সাথে আরেকটার কোন মিলই নেই। এগুলো হল - Crust, 2. Lithosphere, 3. Upper mantle, 4. Asrenosphere, 5. Lower mantle, 6. Outer core, 7. Inner core. (Robart Gardner, Samuel F, Allyn and Bacon, Newton, Howe: General science-1885 Page-319-322) ১২। চাঁদের আলো কার আলো ? : "আল্লাহ তায়ালাই এই সূর্যকে করিয়াছেন তেজস্কর আর চন্দ্রকে করিয়াছেন প্রতিবিম্বিত আলো"। (সূরা ইউনুস:৫) "কত কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাসিচক্র এবং উহাতে স্থাপন করিয়াছেন প্রদীপ এবং চাঁদ-যাহার রহিয়াছে ধার করা আলো"। (সূলা ফুরকান:৬১) চাঁদের আলো যে প্রতিবিম্বিত আলো অন্য কথায় ধার করা আলো একথাটা দেড় হাজার বছর আগের একটা বইয়ে আসাটা খুবই স্বাভাবিক, যদি সে বইটা হয় এমন এক মহাসত্বার কাছ থেকে যিনি সাময়িক জাগতীক ধ্যান-ধারণার অনেক উর্ধে। সুবহানাল্লাহ। বিজ্ঞান সুস্পষ্ট কোরআনের সাথে এখন একমত। ১৩। থিওরী অফ রিলেটিভিটি : রিলেটিভিটি থিওরী মতে আমাদের দৃশ্যমান সময়ের পরিমান, আমাদের নিজেদের আপেক্ষিক বেগের উপর নির্ভর করে। সহজ কথায় সময়ের পরিমাণ বেগের সাথে পরিবর্তনশীল। আইনস্টাইনের আগে কোন বিজ্ঞানী আমাদেরকে এই বিষয়ে ধারণা দিতে পারেন নি। মানুষ তখন সময়কে একটা ধ্রুব রাসি হিসেবে বিবেচনা করতো। আথচ দেড় হাজার বছর আগের কোরআনে আছে আমরা যে সময়কে বাস্তবে বিবেচনা করতে পারি, সেই সময়ই অন্য একটি ক্ষেত্রে সময়ের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। "ফেরেশতারা আর রুহেরা আল্লাহর দিকে উর্ধগামী হয়, এমন একদিনে যাহার পরিমান একহাজার বছরের সমান।" (সূরা মায়ারিজ:৪) "তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কার্য পরিচালনা করেন, অত:পর তা তার কাছে পৌছবে এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান"। (সূরা সেজদাহ:৫) সময়ের পরিমান ক্ষেত্রভেদে ভিন্ন হয়, এই কথাটা থিওরী অফ রিলেটিভিটি যতটা পরিস্কারভাবে বলেছে, তার থেকেও বেশি পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে এই আয়াতদুটিতে। ভুলে গেলে চলবেনা, থিওরীটি আবিষ্কার হয়েছে মাত্র এক শতাব্দি আগে! ১৪। পর্বতের গঠন ও কাজ : "আমি কি করিনি ভূমিকে বিস্তৃত এবং পর্বতমালাকে পেরেকের মত করে" (সূরা নাবা:৬,৭)। আয়াতটি বলছে পর্বতমালাকে পেরেকের মত করে তৈরী করা হয়েছে। পেরেকের কাজ হলো দুই বা ততোধিক কাষ্ঠখন্ডকে এমনভাবে জোরা লাগানো, যাতে সংযুক্ত বস্তুটিকে নাড়াচড়া করে হলেও খুলে না যায়। আমরা যে বিস্তির্ণ ভূমির উপর বিচরণ করি, তা মূলত একধরনের পাতলা প্লেট। এদেরকে বলা হয় টেকটোনিক প্লেট। পৃথিবীর ঘুর্ণনের ফলে এই প্লেটগুলো সদা নড়াচড়া করে থাকে। আধুনিক বিজ্ঞান ব্যাখ্যা দিয়েছে, দুই বা ততোধিক প্লেট যখন একটির উপর আরেকটি চলমান হয়, অথবা ধাক্কা খায়, তখন এদের মিলনস্থলে পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। এই পাহাড় ভূমির উপরে যতদূর উপরে উঠে, পরের অংশে অনেকগুন পরিমানে ভূমির নিচে দেবে যায়। অনেকটা ভাজ সৃষ্টির মত। এর ফলে টেকটোনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়া কমে যায়। অর্থাৎ এই প্লেটগুলোর সংযোগ স্থলে পাহাড় বা পর্বত অনেকটা পেরেকের মত কাজ করে। পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ একটা ভীষণ উত্তপ্ত গলিত তরল পদার্থে পূর্ণ। পেরেকের আকৃতির এই পাহাড়গুলো না থাকলে, পৃথিবীর ঘুর্ননের কারনে, হয়তো কোন একদিকের প্লেট সরে গিয়ে ঐ অঞ্চলের গলিত তরলকে বাইরে বের হয়ে আসার সুজোগ করে দিতো। ফলে ভয়ানক বিপর্যয় ঘটতো। যেমন এভারেষ্ট পর্বতমালার সবচেয়ে উচু মাথা ভূমির প্রায় ৯ মাইল উপরে উঠেছে। ঠিক একই জায়গায় এর ভিত্তিমূল মাটির নীচে পৌছে গেছে ১২৫ কিমি পর্যন্ত। শুধু যদি এই অংশটিকে আমরা বিবেচনা করি, তাহলে একে দেখতে মনে হবে-দৈত্যাকার এক পেরেকের মত! আর কোরআন চমৎকার ভাবে বলে দিয়েছে একথাটাই দেড় হাজার বছর আগে। আচ্ছা মুহাম্মদ (স কি পৃথিবী ঘুড়ে পর্বতগুলোর নিচে কি রকম তা দেখেছিলেন ? ১৫। পর্বতমালার অবস্থান : "তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর (আসলে সেগুলো সচল), অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত সচল হবে। এটা আল্লাহর কারিগরি যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংগত। তোমরা যা কিছু করছ তিনি তা অবগত।" (সূরা নামল:৮৮) ১৯৭৮ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সোসাইটি (ওয়াশিংটন ডিসি) প্রমাণ করে যে টেকটোনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়ার কারণে পাহাড়গুলোও সম্পূর্ণ স্থির নয় বরং প্রতি বছর ২-৫ সেন্টিমিটার করে সরে যাচ্ছে। যদিও এদের কার্যক্রম পেরেকের মতই। আর আমরা পাহারকে স্থির মনে করে যে একটা ভুলের মধ্যে আছি. একথাটাই কোরআন বলেছে কাব্যিকভাবে। ........................চলবে
Posted on: Fri, 09 Aug 2013 23:29:36 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015