::::::আমি অ-মুক্তিযোদ্ধার - TopicsExpress



          

::::::আমি অ-মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আমার কোন কোটা নেই:::::: আজকে যারা মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের পাশাপাশি সকল কোটা বাতিলের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে নিজেদের অধিক মেধাবী বলে দাবী করছেন তাদের জন্য কিছু কথা না লিখে পারছিনা। সদ্য ফলাফল প্রকাশিত বিসিএস এর কথা বাদ দিয়ে যদি বিবেচনা করি তাহলে অতীতে সকল বিসিএস এর ফলাফল প্রিলিমিনারী এক্সাম, রিটেন এক্সাম, ভাইভা এভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। যে ছেলে-মেয়ে প্রিলিমিনারী, রিটেন পরীক্ষায় পাশ করে ভাইভা পর্যন্ত যায় তাঁকে আপনি মেধাবীর তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন শুধুমাত্র কোটা থাকার কারণে। কেন? আপনাদের যাদের বিসিএস এক্সাম দিচ্ছেন, যাদের এক্সামের মাধ্যমে চাকুরী হচ্ছে, হয়েছে, হবে...শুধুমাত্র আপনারাই মেধাবী এই সার্টিফিকেট কে দিয়েছে? কোটাপ্রথা চালু হয়েছে ১৯৯৬ সালের পর থেকে (অনেকের এলার্জি মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য)। কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন কেন এই কোটা চালু করতে হল? যে দেশে রাজাকার হয় রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, এমপি, সেই দেশেই দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাংলাদেশটির জন্মদাতা মুক্তিযোদ্ধারা মারা যায় না খেয়ে, বিনা চিকিৎসায় তখন আপনারা কই ছিলেন? আমরা পারিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করতে, এমনকি তাদের যোগ্য সম্মনটুকুও দিতে পারিনি। অন্তত তাদের মৃত্যুর আগে তাদের সন্তানদের একটা চাকুরীর নিশ্চয়তা দিয়ে অবহেলিত সমাজে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস আমাদের সকলের মেনে নেয়া উচিত। তা না করে উলটো বিরোধীতা করছি। এই লজ্জা রাখি কোথায়? কেউ কেউ বলছেন তারা অযোগ্য, আমি বলছি জেনে রাখুন, তারা শতভাগ যোগ্য। এর পেছনে একটা স্পষ্ট যুক্তি, তারা বিসিএস এর প্রিলি, রিটেন, ভাইভা দিয়েই চাকুরী পাচ্ছে। আমার কথা সাথে কেউ দ্বিমত পোষণ করলে আপনাকেই আমি প্রশ্ন করবো আপনি মেধাবী এই যোগ্যতার মাপকাঠি কি? ধরি আপনি যদি ৬৫ উর্ধ্বো নম্বর পেয়ে প্রিলিতে পাশ করেন তাহলে সে মুক্তিযোদ্ধার ছেলেটিও তাই করেছে, আপনি যদি রিটেনে নির্ধারিত নম্বর পেয়ে ভাইভাতে উত্তীর্ণ হওন তাহলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলেটিও তাই করেছে, শুধু ভাইভাতে কোটা থাকাতেই কি অযোগ্য প্রমাণিত হয়? আমার দৃষ্টিতে কোটাপ্রথা বাতিল জামাতী ইস্যু ছাড়া কিছু নয়, আপনি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুযোগ না দিয়ে যদি ভাবেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তাহলে আপনার এই সংকীর্ণ চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে দেশ জাতি সামান্যতম উপকৃতও হবেনা এতটুকু আমি নিশ্চিত। শুধু নিজেরাই সব সুবিধা ভোগ করেন তাহলে তো হবেনা। দেশের উন্নতির জন্য আপনাকে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হহবে, নৃ-গোষ্ঠীকে সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদেরকে এগিয়ে আসার পথ করে দিতে হবে, যাদের জন্য আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ তাদের সুযোগ দিতে হবে। মনে রাখবেন যে মুক্তিযোদ্ধারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত তারা এই সুযোগ পারত পক্ষে নিবেনা, তাই যারা এই সুবিধা ভোগ করে তারা পিছিয়ে আছে। আন্দোলন যদি করতেই হয় তাহলে বাতিলের জন্য নয়, সংস্কারের জন্য হতে পারে মেধাবী চত্তরের কিছু মূর্খ বলে বেড়াচ্ছেন বিশ্বের কোন সভ্য দেশেই নাকি কোটা নেই। নাইজেরিয়া, সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়া, পাকিস্থান এবং আফগানিস্তান সহ বিশের প্রায় সবদেশেই কোটাপ্রথা চালু আছে। তাহলে, সাউথ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়া এরা কি অসভ্য দেশ? আপনার কাছে আমার প্রশ্ন সভ্য দেশের সংজ্ঞা কি? আমেরিকা আমাদের দৃষ্টিতে সভ্য দেশ, সেখানেও রেপ, নারী নির্যাতন, হত্যা, ছিনতাই, রাহাজানি আমাদের দেশের তুলনায় বেশি হয়। যে দেশে শফিদের মত মোল্লারা নারীদের নিয়ে কটুক্তি করার পরও কোন প্রকার প্রতিবাদ না করে বিরোধীদলীয় নেত্রী একসাথে ইফতার করেন সেই দেশে আপনি সভ্য দেশের দোহাই দিয়ে অনগ্রসর গোষ্ঠীকে আরও ১০০ পিছিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন আমি অন্ততপক্ষে তার বিরোধীতা করবোই।
Posted on: Wed, 17 Jul 2013 18:26:47 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015