একটা মেয়ে এত চঞ্চল থাকে - TopicsExpress



          

একটা মেয়ে এত চঞ্চল থাকে কি করে? সবাই ভাবে এত হাসে কিভাবে মনি?? কেউ যদি তাকে বকাও দেয় তারপরও তার হাসি আর থামে না। তার নাম মনিমা রায়। সকালে পূজা শেষ করে কলেজে যেতে হয়। তার একটাই বেষ্ট ফ্রেন্ড নামঃ সামিরা নুর। খুবই খুবই ভাল ফ্রেন্ড। স্কুল লাইফেও তারা একসাথে ছিল। কলেজেও একসাথে। কলেজের প্রথম দিন মনি দৌড়ে সিঁড়ি বেঁয়ে উঠছিল। হঠাৎ ধাক্কা খেলো!!! পিছনে না দেখতেই বলল যে সরি!!! যখন দেখলো বুঝলো যে একটা ছেলের সাথে ধাক্কা খেয়েছে… কথায় আছে যে At The First Sight Of Love. প্রথম দেখায় প্রেমে পরে গেলো। আর কোন কথা হল না। ক্লাসে এসে সামিরাকে বলতে লাগলো “ জানিস সামু, আজ একটা সুন্দর ছেলে দেখলাম, অনেক ভাল লাগলো।“ সামিরা হেসে বলে যে কাকে দেখলি আবার? নাম কি?” মনি বলল জানি না তো। গণিত ক্লাস করতে গিয়ে দেখে সেই ছেলেটি যার সাথে মনি ধাক্কা খেয়ে প্রেমে পরেছে। জানতে পারলো ছেলেটির নাম আবিদ। প্রতিদিনই দেখা হতো কিন্তু কথা তেমন বলা হতো না। মনির মনের মধ্যে একটু একটু করে গড়ে উঠছে ভালোবাসা। কেউ জানলো না এমন কি সামিরাও না। সবার কাছ থেকে লুকিয়ে ভালবাসছিল সে। আবিদকে দেখলেই মনের মধ্যখানটায় ধুক ধুক করে উঠতো, স্তব্দ হয়ে যেতো মনি। একদিন স্যার এর বাসায় দেখা হল আবিদের সাথে। স্যার বলল ওনাকি অনেক Brilliant!!! তার কাছথেকে হেল্প নিবে ভাবলো মনি। তাই সাথে সাথে বলে উঠলো এটা বুঝাতে একটু হেল্প করবে? আবিদ বলল “OK” মনি দেখলো ছেলেটা একটু বোকা। তাকালোও না। শুধু পড়াটাই বুঝাতে লাগলো । মনি তো আজ অনেক খুসি!!! এভাবেই দিন কাটতে লাগলো। আর মনির মনে অজান্তেই আবিদের জন্য ভালোবাসার সৃষ্টি হল যে ও ভুলেই গেল যে অদের ধর্ম আলাদা। এভাবেই দিন যায়। কিছু বলা হয়ে উঠলো না মনির।কিন্তু একদিন আবিদের এক বন্ধু বলল যে আবিদ নাকি মনির বেষ্ট ফ্রেন্ড সামুকে (সামিরাকে) ভালবাসে। কিছুদিনের মধ্যে প্রপোজ করবে!!! শুনে যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। বাসায় এসে কি কান্না। কান্না যে আর থামে না। কাউকে বলতেও পারছে না তার কষ্টের কথা। তার আজ মনে হচ্ছে কেউ তাকে ভালবাসে না। মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব এমন কি সৃষ্টি কর্তাও না। আজ বড় অসহায় সে। সে ভাবল কেউ তাকে একদিন ভালবাসবে। তার ভালবাসার টানে মনিও তাকে ভালবাসবে। কিন্তু আজ একি শুনলো সে??? এদিকে আবিদ সামিরা কে প্রপোজ করেছে। সামিরাও হ্যাঁ বলেছে। তাই এখন তাদের এফেয়ার চলছে। মনি বুঝতে পারলো তারই তো ভুল। কি হবে এসব ভেবে? তারপরও সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। কোথায়ও মন বসে না। কলেজেও যায় না। পড়ালেখা বন্ধ প্রায় অনেক দিন। সামনে H.S.C পরীক্ষা। তার মা’র তো অনেক টেনশন যে মেয়ের কি হল??? H.S.C পরীক্ষা শেষ। এদিকে মনির বাবা চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লায় ট্র্যান্সফার হয়ে চলে গেল। ওদেরকেও নিয়ে গেল। সবকিছু চট্টগ্রাম এ রেখে মনি শুধু ২ বছর এর কিছু সৃতি নিয়ে গেল কুমিল্লায়। কয়েক মাস পরে…………… মনি এখন অনেক অনেক চেঞ্জ। কারো সাথে আর হাসে না। কথাও কম বলে। একা একা থাকলে দুচোখ বেঁয়ে পরতে থাকে অশ্রু-র ফোয়ারা। সে কি করবে এখন!!!! সে যে অনেক একা এখন। মাথায় শুধু আবিদ আর আবিদ। আর কিছুই বুঝে না। সামিরা মনিকে কল দিয়ে বলে ওদের প্রেম এর কথা। মনি চুপ করে থাকে। আর হেসে বলে ভাল থাক তোরা। মনির একটাই চাওয়া যেন আবিদ ভাল থাকে!!! আবিদ চট্টগ্রাম মেডিকেল এ Admission নিলো। আর সামিরা চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে। আর মনি কুমিল্লা ইউনিভার্সিটিতে। একদিন শুনলো সামিরার সাথে মনির ব্রেক আপ হয়েছে। কষ্ট লাগলো অঙ্কে। ভাবতে লাগলো জীবনটা কত রহস্যময়। একদিন একটি অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে মনির মোবাইল-এ। রিসিব করল সে। অপর প্রান্ত হতে আবিদ রাগান্বিত হয়ে বলছে “তুমি নাকি আমায় ভালোবাসো?” মনি তো থ হয়ে গেল!! মনিঃ কে বলল তোমাকে? আবিদঃ আমি শুনলাম। দেখো এসব আজেবাজে চিন্তা মাথায় আনবেনা বলে দিচ্ছি। কোথায় তুমি আর কোথায় আমি। এই কথা বলেই লাইন কেটে দিলো আবিদ। মনি ভাবল কে না কে কি বলল তাই নিয়ে আমার সাথে এমন খারাপ ব্যবহার ??? এতটাই অসয্য আমি ওর কাছে??? আমি তো কাউকে কিছু বলিনি। পরে জানতে পারলো আবিদের এক বন্ধু কাজটা করেছে। তার নাকি মনে হয় ও আবিদকে অনেক ভালবাসে তাই বলেছে। সব কিছু থেকে মনি এখন অনেক দূরে। বেষ্ট ফ্রেন্ড থাকে দূরে আর তার ভালবাসা আবিদ যাকে সে এত ভালবাসে সেই তাকে সয্য করতে পারে না……… মনি এখন ও একা। কিন্তু তার মনে এখনও এই বিশ্বাস আছে যে একদিন আবিদ তাকে বলবে তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি। এই আশায় মনি প্রহর গুনছে।
Posted on: Tue, 01 Oct 2013 07:03:35 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015