নতুন নতুন পায়রাগুলি, এক - TopicsExpress



          

নতুন নতুন পায়রাগুলি, এক মহাঢিঁচক্যাঁউ ককটেল (কবি-বেবী-নতুন কবিতা-বারীন-সিঙ্গলহ্যান্ড)- ব্যাকগ্রাউন্ড একটু প্রয়োজন। না, এ বস্তু পড়ার জন্য নয়। একটা সময় জানার জন্য। একটি নতুন বাংলা পিরিয়ডে আমাদের এ্যাটেন্ডেন্স কি জাতীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিল জানার জন্য। সময়টা ২০০০-২০০৫। তার আগে একটু পিছিয়ে যাওয়া প্রয়োজন... যেখান থেকে শূন্য পাওয়া একটি দুর্দ্দান্ত গল্প শুরু হয়......... ১৯৯৬-৯৭ সাল নাগাদ জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজে দুটি ছেলে, একজন সিভিল আর আরেকজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং পড়তে এসেছিল। একে অপরের অপরিচিত। ফ্রেশার্স ওয়েলকামের দিন একজনের কবিতা লেখা ডায়েরী হারিয়ে যায়। দ্বিতীয়জন সেটি বেওয়ারিশ অবস্থায় পায় কমন রুমে। পাতা উলটে দেখে একটি কবিতা রোদ্দুরকে লেখা একটি চিঠি। এবং পড়া মাত্র দ্বিতীয়জন বুঝতে পারে যাক, যথার্থ স্যাঙাৎ এখানে হাজির। দ্বিতীয়জন সদ্য বেশ রোমাঞ্চকর জীবন কাটিয়ে এসেছে, যাতে কবিতা লিখে মার্ক্সবাদ, কবিতা লিখে প্রোপোজ, কবিতা লিখে প্রেম, কবিতা লিখে আওয়াজখাদক, মায় প্রেমিকার আত্মহত্যা অবধি ঘটে গেছে কলেজে আসার আগে। ফলে ভেতরে ভুরভুর করছে, গুড়গুড় করছে, সুড়সুড় করছে, ফুরফুর করছে কবিতা। কিন্তু কবিতা কি একেলা হয়? এই টেনশান প্রবল তো ছিলই। সেই বেওয়ারিশ ডায়েরী পড়ে তার সব টেনশান কেটে যায় মায় বুঝতে পারে আগামী চারবছর এসপার ওসপার করে ফেলার জন্য সলিড পার্টনার কাম পাঙ্গাবরদার সে পেয়ে গেছে। এবার পৃথিবীকে দেখে নেওয়া যাবে। শার্লক পেয়ে গেছে পোয়ারোর এ্যাড্রেস। ডায়েরীমালিক কে, খোঁজ করতে করতে জানতে পারে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজের সুবিখ্যাত র‍্যাগিং পিরিয়ডে সে নাকি যে শুনতে চেয়েছে অম্লানবদনে তাকে নিজের কবিতা শুনিয়েছে হোস্টেলখোরাক হওয়ার চাহিদায় ননস্টপ তুমুল জোগান দিয়ে। ফলে কলেজরীতি অনুযায়ী তার নবনাম বা নিকনেম হয়েছে কবি। দুটি হোস্টেলে ভাগ করে থাকে ফার্স্ট ইয়ার। হোস্টেল ওয়ান আর হোস্টেল টু। হোস্টেল ওয়ানের ব্যাকউইংগসএ থাকে ডায়রীমালিক সন্ধানী আর হোস্টেল ওয়ানেই ফ্রন্ট উইংগসে থাকে ডায়েরীমালিক কবি। কবির সঙ্গে সাক্ষাৎ আলাপ হয় ডায়েরী পাওয়ার দুদিন পরে। একটি শনিবার বিকেলে। জলশহরে তখন জানুফেব্রু জাতীয় সময়। ক্যাম্পাস একটি বিশাল অনির্ব্বচন। গাছে গাছাক্কার, হোস্টেলের পেছনে ফিতের মতো একটা নদী, নাম রুকরুকা। পাশে ঘোর চা বাগান, ডেংগুয়াঝাড়। সকালে কাঞ্চনপাহাড় দেখা যায়। মেন গেটের পাশে এন এইচ থার্টি ওয়ান এ। যেখানে দুপাশে ছোট ছোট ঝুপড়ি দোকান, বাংলা মদের। পাকা দোকান, পান বিড়ি সিগারেট, এস টি ডি, জেরক্স। পঞ্চাশ পয়সা ঘন্টা রেটে ভাড়া পাওয়া যায় সাইকেল, যা দিয়ে সামান্য এগোলেই পরপর দুটি ধাবা, বাচ্চু আর শঙ্কু, যেখানে চব্বিশ ঘন্টা রাম বীয়ারের সাপ্লাই। তো এমন একটি এলাকায় দ্বিতীয়জন, যে উত্তর কলকাতার ভাষায় বেশ পাখোয়াজ ছেলে, বাংলা খেয়ে লায়েকনবাব হয়ে দেখা করে কবির সাথে সেই ডায়েরী হাতে নিয়ে। বলারও প্রয়োজন পড়ে না আমিও লিখি। শোনা আর শোনানোতেই তুলকালাম হয়ে যায় এমন যে পরের দিনই দুজনে নিজেদের লেখার খাতা বগলদাবা করে সোজা চলে আসে হাইওয়েতে আর বাস ধরে এক্কেবারে পাহাড়ের মধ্যে। যেখানে একটি সেতু ও সেতুর তলায় তিস্তা নিজের খরস্রোতা ভার্জিনিটি নিয়ে। তর সয়না, হুড়মুড় করে নেমে যায় তিস্তার ধারে। দুইবন্ধু ঘটে গেছে তখন। একজন শান্ত আর আশ্চর্য উদাস। আরেকজন সদা কলকলায়মান অতিশয় দামাল। একজন সেবকের তিস্তাধারের অপূর্ব নুড়ি নিয়ে হাতে নাড়াচাড়া করে আর আরেকজন নদীতে নেমে প্রমান করার চেষ্টা করে সে কতো ভয়ডরহীন। খুব জরুরী দেওয়া নেওয়াগুলো ওখানেই হয়ে যায়, মানে কার জীবনে কত দুঃখ, কার কি কি জীবনদুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা, কার কি কি বহুমূল্য সিক্রেট, ব্যার্থ প্রেম, অবৈধ সেক্স ইত্যাদি। এবং তারপরেই রঙ্গমঞ্চ হয়ে দুজনেরই রঙ্গে রঙ্গে মঞ্চে মঞ্চে নেমে আসে লেখা, কবিতা। একটি বড় চৌকো আকারের ডায়েরী আর আরেকটি লালকালো কাগজে মলাট দেওয়া হাতে বাঁধা গোলাপী কাগজের খাতা (দ্বিতীয়জনের প্রাক্তন প্রেমিকা যা তৈরী করে দিয়েছিল নিজে হাতে) নিজেদের মধ্যে কথাবার্ত্তা শুরু করে এই দুজনকে ভুলে গিয়ে। চৌকো ডায়েরীতে ছিল রোদ্দুরকে লেখা একটি চিঠি, শাওন ইত্যাদি, আর গোলাপী পাতার খাতায় ছিল রঙ্গমা সিরিজ,গাছতলা, যাই ইত্যাদি... সন্ধ্যে হয় হয়, যখন ওরা ক্যাম্পাসে ঢোকে। ততক্ষনে শ্রদ্ধা শেখা হয়ে গেছে দুই বন্ধুর একে অপরকে। এবং জানা হয়ে গেছে জীবনের যে অংশকে আজীবন বলে, তার মালিকানা কার হাতে থাকবে। এবং সেই মালিককে তৈয়ারী করার অনন্ত প্রক্রিয়া বা রেওয়াজ কতদূর অন্তরঙ্গ। একে অপরের কাছে নাড়া বেঁধে ফিরেছে দুই বন্ধু। বলতে গেলে তখনই এই বইটির অদৃশ্য এমব্রায়ো ঘটেছিল। তিস্তার ধারে নুড়িপাথরগুলির সাথেও যে কথা বলছিল তার নাম ছিল কলেজে কবি, ইন্দ্রনীল ঘোষ। আর যে তিস্তায় নেমে বেপরোয়ানেসের শো অফ করছিল তার নাম ছিল কলেজে বেবী, অমিতাভ প্রহরাজ। যে তার নয় বছর বাদে প্রথম বই এটি, চলো, সিঙ্গলহ্যান্ড প্রকাশ করে উৎসর্গপত্রে যাকে বলে ইন্দ্রনীল, তাকে লিখে...... # মনে হতে পারে যেন এ্যাডোব ফোটোশপের ইতিহাস বলতে গিয়ে আলতামিরা থেকে শুরু করছি। কিন্তু কারন আছে। কারন লুকিয়ে আছে আমার উৎসর্গপত্রের কমায়, যাকে বলে ইন্দ্রনীল, তাকে। আমার গঠনপর্বের বউনিই হতোনা ইন্দ্রনীল না থাকলে। বলাটা শিখতেই পারতাম না। জলপাইগুড়ির চার বছরের শুরুতেই আমরা একে অপরকে এক অলৌকিক মন্ত্রগুপ্তি শিখিয়ে দিয়েছিলাম, কি বলা নয় আমাদের প্রেম ভালোবাসা সব ওই বলাটার সাথে। কি আশ্চর্য না, ঠিক সেই মুহূর্তে বাকি বাংলায় বারীন ঘোষাল নামক এক অপূর্ব ভিলেন গড়ে তুলছেন আবাংলা-বাহিরবাংলা জুড়ে প্রথম এক কবিতার সার্থক বিরাদরি আর নানারকম সমস্তকে সেলাই করছেন বিষয়হীন কবিতা নামে এক তোলপাড়ের সুতো দিয়ে (অপূর্ব শব্দটির চেয়ে সার্থক প্রয়োগ আর পাইনি এই কবিমাস্তানের সম্বন্ধে, যিনি সিগনেচার ফাটিয়েছিলেন পুব আর ফুরোয় না বলে)। কবি আর বেবী তখনো ও জগতের সাথে অপরিচিত। তখনো একজন জয়মুগ্ধ আর আরেকজন শাক্ত। তবু সেই তোলপাড়ের এসেন্স, কি বলা নয়, বলাটাই আসল, আমাদের মাথার জরায়ূ দখল করে নিয়েছে। এটাই কি সময়ের নিজস্ব টেলিপ্যাথি বা পি এন পি সি, যা নিরন্তর আমাদের কানের কাছে করে? ভাবতে অবাক লাগে, আজ যে বিষয়হীন কবিতার প্রকান্ড বিস্তার প্রতিষ্ঠান-অপ্রতিষ্ঠান নির্বিশেষে, একসময় তার জন্য কি তুমুল বিদ্রুপই না বরাদ্দ ছিল। অমন কবিতা বা লেখা নিয়ে টিটকিরি আমার বা ইন্দ্রর গা সওয়া ছিল। পাত্তার প-এরও প্রশ্ন ওঠেনা। অবশ্য ততদিনে জলশহর কবিতাট্রেকের জন্য গুরুসঙ্গ বা গাইডের হেপাজতে তুলে দিয়েছে আমাদের। নীলাদ্রি বাগচী, দেবাশিষ কুন্ডু। লেখার ম্যাজিক জগতে আমরা এই দুজন এরকানের (এরকা, এক বিস্ময় পত্রিকা) হাত ধরে ঢুকছি। একজন দেখাচ্ছে এই ম্যাজিকের গভীরতা আর আরেকজন প্রতিদিন একটু একটু করে দেখাচ্ছে এই ম্যাজিকের অসীম দৈর্ঘ্য প্রস্থ। আর মাঝরাত্রে নীলাদ্রিদার স্কুটার, ঘোরদুপুরে দেবাদার সাইকেল, রাতজাগানিয়া কবিতা, দিনভর্ত্তি কবিতার পর কবিতা, প্রেম-বন্ধু-বিচ্ছেদ-ভাঙন-হুল্লোড়-কসমকস-সেক্স-দীনবাজার-রুকরুকা-মদ-মর্মর সহযোগে তৈরী হচ্ছে যাপন। শঙ্খচূড়ের মতো বাংলা ভাষার সুবিশাল কবিতা লিগাসী, তার চেরা জিভের দু প্রান্ত থেকে দুজন ঢুকে যাচ্ছি শীতল সুড়ঙ্গে, খাজুরাহো দেখার মতো অপলক দেখছি তার বিষদাঁত, স্ট্যালাকটাইটস স্ট্যালাগমাইটস এর মতো জেগে থাকা অন্যান্য দাঁতের শোভা দেখছি, দেখছি সেই লিগ্যাসির বিষথলি, দেখছি তাজমহলের খোলস খুলে রেখে মুমতাজ মিশে যাচ্ছে হাওয়ায়, আরো কত কি... তখনো প্রথা-অপ্রথার দাম্পত্য কলহ জানিনা কিছুই, বড় মেজো সেজো কবি নয়, কাকুতেই বেশী অভ্যস্ত। নীলাদ্রিদার মতো আক্ষরিক নির্বিচার কবিতা খাদক আমাকে কবি নয় কবিতা দেখায়। এখন বুঝি যে কি সাংঘাতিক লাক পেয়েছিলাম আমরা যে গঠন পিরিয়ডে আমাদের দুজন গাইড কখনো সিক্স লেন-এইট লেন-ওয়ান ওয়ে দেখায় নি, দেখিয়েছিল বিশুদ্ধ রাস্তা, যার ভাগ নেই। ফরিদ খাঁর বাঘ মেরে তৈরী করা গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোডের মতো আদিম। জলশহরের উষ্ণতায় কোন উঁচু নীচু ছিলনা। # তেমনই আরেক অবিশ্বাস্য লাক হলো কবি আর বেবী একে অপরের সাপেক্ষে কি ভীষন আলাদা ছিল। একজনের রেফারেন্স থেকে দেখলে অন্যজন বিশুদ্ধ ইউনিক। এই বোধ যে ইন্দ্র যা বা যেরকম বা যেদিক দিয়ে লেখে, ভাবে সেদিক দিয়ে তো আমি কখনোই ভাবিনি। আমার এরকমটাতো-ভেবে-দেখিনি-কখনো ভাবনাগুলির অমনিবাস ছিল ইন্দ্র। এটা কোন আলাদাবোধ নয়, এটা পদে পদে ইনফিনিটির অস্তিত্ব মালুম করায়। লেখার জগতে সম্ভাবনা যে ইনফাইনাইট তা বোঝার জন্য কোন স্পেশাল পেপার নিতে হয়নি। হাতে কলমে বুঝতাম প্রতি মুহূর্তে একে অপরকে দেখে। এবং এর ফলে সমান্তরালভাবে যে জিনিস নিয়ে বাংলা লেখাভুবন তোলপাড় হচ্ছিল, সেগুলির হদিশ না রেখেও অজান্তেই তা অনুভব করছিলাম আমরা। যেমন ভাবনাই কবিতা, বিষয়হীন কবিতা, স্বকীয়তাই কবিতা, কবিতা উদ্দেশ্যশূন্য, নিজস্ব ভাষার প্রয়োজনীয়তা, নকলের অপ্রয়োজনীয়তা, সর্বোপরি নিজস্ব চেতনা টপকানো জগত তৈরী করা এগুলি আমরা একে অপরের সাহায্যে হাতে কলমে খুঁজে পাচ্ছিলাম, প্রায় আবিষ্কারের মতো। এখানে খুব জরুরী বলা যে, এটা কোন আতম্ভরিতা নয় বা এমন কোন দাবী নয় যে আমরা দুজন মহাজিনিয়াস নিজে নিজেই পরীক্ষামূলক লেখার এই ধাপগুলি বানিয়ে ফেলেছি। হয় কি, সময়ের মধ্যে একটা তরঙ্গপ্রবাহ উঠলে তা সময়ে ডুবে থাকা সকলকেই নাড়িয়ে যায়, জানতে হোক কি অজান্তে। বারীন ঘোষাল, কবিতা ক্যাম্পাস মিলে নতুন কবিতার যে অভূতপূর্ব্ব তরঙ্গপ্রবাহ শুরু করেছিলেন, সেই কাঁপন আমরা অজান্তেই আপন করে নিয়েছিলাম। কারন নতুন কবিতা কোন শূন্য থেকে আবিষ্কার ছিলনা। ছিল একটা তীব্র নীড, যে নীড বারীন ঘোষালের ল্যাবে পাকড়াও হয়েছিল, ব্যাটাকে-ধরেছি হয়েছিল, সেই নীডের ধাক্কা সকলের মনের বারান্দায় রেলিং ভাঙচুর করেছিল। # এখান থেকে নতুন কবিতা অংশে চলে যাবো জাম্পকাটে। মাঝখানে দুজনের রুকরুকা, স্বপন রায়ের ডুরে কমনরুম ও সেই সূত্রে ক্যাম্পাস-কৌরব জগতের সাথে পরিচয়, তারপর আমার কলকাতা, মেস, অনির্বান-দেবাঞ্জন-অর্ঘ্য-অরূপ একসাথে, সামান্য আগে বৈখরী ভাষ্য, জীবনের ফুটপাথ প্রধান অংশ, রাতজাগা অংশ, নৃশংস নেশাংস ও কীর্তি তস্য মহাকীর্তি স্থাপন অংশ, লিভ টুগেদারাংশ...... এসব আরেক মহা-আখ্যান, অনেকের কিছুটা জানা, কিছু এদিক ওদিক। ওসব নিয়ে অন্য বড় আমোদিনী লেখা হবে, যাপন নির্মানের আখ্যান, অন্য কোন খানে। আমি সোজা চলে আসবো নতুন কবিতায়। কারন ওই পরিপ্রেক্ষিতটা মেলে ধরা আমার উদ্দেশ্য। বাচ্চারা যারা নতুন কবিতার ইতিহাস, ডকুমেন্টেশান নিয়ে আগ্রহী তাদের জন্য অসংখ্য প্রবন্ধ হীরে মাণিকের মতো কবিতা ক্যাম্পাস, কৌরব, নতুন কবিতা, ভিন্নমুখ, কুরুক্ষেত্র ইত্যাদি পত্রিকায় পাবে। আমি বলছি এক প্র্যাক্টিকাল ক্লাসের কথা। যুদ্ধক্ষেত্রর ভেতর থেকে সাব মেশিনগান চালাতে চালাতে আঁখো দেখি, সামিল হুই, হাল। # তো যা বলছিলাম। যখন সরাসরি নতুন কবিতার জেহাদের মধ্যে এসে পড়লাম তখন বিন্দুমাত্র অচেনা লাগেনি কোনকিছু। কোন ইস্তেহার, কর্মসূচীর অস্তিত্বের প্রয়োজনবোধ হয়নি। প্রয়োজনবোধ হয়নি কবিতার ক্লাসের বা কোন ইজম ঠেসে তোষক বানানোর জীবনযাপনের জন্য। সবই ছিল চেনা, মেনে নেওয়া অংশ, মেনে না নেওয়া অংশ, সবই খুব স্বাভাবিক, এমনই-তো-হওয়ার-কথা জাতীয় এ্যাটিটিউড ছিল, উন্নাসিকতা নয়। বলতে গেলে যখন সরাসরি বারীন ঘোষাল-স্বপন রায়-রঞ্জন মৈত্র-প্রণব পাল-অলোক বিশ্বাস-ধীমান চক্রবর্তী এই ভুবনে এসে পড়লাম তখন কোন বিলেতবোধ হয়নি, উলটে মনে হয়েছিল দেশের বাড়ি ফিরেছি বহুদিন বাদে। আসলে অবাকশিল্প, চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্রে, আমি আর ইন্দ্রনীল নিরবিচ্ছিন্নভাবে একে অপরকে সাপ্লাই করে গেছি বা যাচ্ছি। তাই আলাদা করে অবাকবোধের কোন প্রয়োজনীয়তা জাগেনি। মুগ্ধবোধ ও তার উষ্ণতাই ছিল যথেষ্ট। জলশহর আমাদের দুটো বড় দামী নি-শব্দ শিখিয়েছিল নির্বিচার আর নিজস্বতা। নির্বিচার কেমন? না কলেজে লোপামুদ্রার গাওয়া বেণীমাধব বার বার চালিয়ে শুনেছি, এঞ্জয়ও করেছি। বা ব্রততীর আমিই সেই মেয়ে, পুরোদমে উপভোগ করেছি। কিন্তু না ইন্দ্রনীল না আমি, কেউ কখনো ভাবার প্রয়োজনবোধ করিনি আমাদের লেখায় কি আবৃত্তিযোগ্যতা আছে কি নেই, রাখবো কি রাখবো না। কারন ওটি বিশুদ্ধ অপ্রাসঙ্গিক, মাথা ঘামানোর বিন্দুমাত্র কারন নেই। দুজনেই এন্তার ছন্দে লিখেছি নাছন্দে লিখেছি, এবং খুব স্বাভাবিক ভাবে ও বিষয়ে সময় নষ্ট করার প্রয়োজনবোধ করিনি। সাত মাত্রা না সাত দশমিক তিন রেকারিং মাত্রা, এ নিয়ে তর্ক বিতর্ক করা যে বৃহৎ গান্ডুমি তা দুজনে অবলীলায় হৃদয়ঙ্গম করে গেছি। পরে যখন ছন্দের অপ্রয়োজনীয়তাটি বেশী মূল্যবান আমাদের রাস্তায় তা বুঝেছি ও নেট প্র্যাক্টিসে নেমেছি, তখনো একটি প্রবণতা চতুর্দিকে প্রকট। প্রবণতাটি হলো, দেখো আমি ছন্দে জিনিয়াস, চাইলেই লিখে দেব বাঘা কবিদের মতো ছন্দে, মারকাটারি মর যানা প্রেমের গন্ধে, চাইলেই আর্টেজীয় কূপের মতো উপচে দিতে পারি তোমাদের তুখোড় কবিতা দিয়ে, এই সব পারি কিন্তু করিনা, এবার বুঝেছ আমি কে? হুঁ হুঁ বাবা আমি গজু বসু, আমার মাথা শসার মতো ঠান্ডা। এই যে প্রবণতা, আমি চাইলে তোমার হীরোকে হারিয়ে দিতে পারি, তবু আমি কমন ম্যানের রোলে এ্যাক্টিং করি, এটির প্রতি রিপালসান কাজ করতো বড়। হাস্যকর লাগতো। বরং সরাসরি নতুন কবিতার হৃদয়ে এসে পড়ার পর অনেক জরুরী লেগেছিল নিজস্ব প্র্যাক্টিস তৈরী করা... যে প্র্যাক্টিস পরিশ্রম স্বপন রায়ের মেঘান্তারার স্বর্গীয় কবিতাদের মধ্যে আছে তাকে প্রতিবিন্দু অবধি সন্ধানের চেষ্টা করছিলাম, কুয়াশা কেবিন, ডুরে কমনরুম পড়ে ধাপগুলো স্টাডি করছিলাম, ভাবছিলাম সুবর্ণরেখা রানওয়ে থেকে সেভেন বেলোর বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটা কিভাবে তৈরী হয়েছে, কিরকম ভাবে মোড় ঘুরেছে ভাষাবদলের কবিতা বা রূপসা পিয়ানো। আর এর সবসাথে ছিল বারীন ঘোষালের একেকটা গদ্য লেখা নিয়ে নুনুতে এ্যাসিড বাল্ব মারার মতো... যা পড়তাম, পড়ে অবধারিত রাগতাম আর সারাক্ষন রাস্তায় অফিসে একটা মানস বারীন ঘোষাল নিয়ে ঘুরতাম, যাকে আমি পদে পদে দুরন্ত যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি কেন ওনার ছাব্বিশ দফা প্রতারনা মানিনা। বোতলে বন্ডেল গেটের বাংলা জল মিশিয়ে খেতে খেতে বালীগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে হেঁটে হেঁটে বাঘা যতীন ফিরছি মাঝরাতে একা, সারা রাস্তায় বারীন ঘোষালকে নানান জুডো ক্যারাটের প্যাঁচে পর্যুদস্ত করছি কারন উনি সেভেন বেলোর বাড়ির মুখবন্ধে কেন বলেছেন সুবর্ণরেখা রানওয়ের সময় রঞ্জন তার প্রতিকবিতার স্তরটি পেরোচ্ছিল। উত্তেজিত কথোপকথন চলছে হাঁটার সাথে, যুক্তি-প্রতিযুক্তি, আর ফুটপাথের মহিলা তার বাচ্চাটিকে বলছে পাগলা হ্যায় রে। পাস মত যা, কাট দেগা... সুবর্ণরেখা মুগ্ধ আমি রঞ্জনদাকে চিঠি লিখতে গিয়ে হঠাৎ আবিষ্কার করছি এমন সব বাক্য আমাকে কে লিখিয়ে নিল... ফাঁকা ঘরে কাল্পনিক বারীন ঘোষালকে আমি কাট কাট গলায় বলছি আপনার অতিচেতনার কথা একটা বাল। আমি আপনার সামনেই প্রমান করতে পারি (তখনো বারীনদা আপনি, কারন মুখোমুখি কথা তো মাত্র কয়েকবার), বলে খাতা খুলে একের পর এক যুক্তি শানিয়ে নেওয়া, লিখে লিখে দেখানো আর আমার ঘরের মেঝেতে মাঝে মাঝে পত্রমোচী কোরেক্স গাছ থেকে ঝরে পড়ছে এক একটা খালি কোরেক্স বোতল, উড়ে যাচ্ছে আট প্যাকেট চ্যান্সেলার। এবং আমি জানি খানিকক্ষণ বাদে চাটু-দেবা আসবে, বা আমি ইন্দ্রকে ফোন করবো আর আমার কোন এক শিহরণ জাগানো চিন্তাবিষ্কার বলে আরেকপ্রস্থ তর্ক শুরু করবো। জহর সেনমজুমদার নাকি বারীন ঘোষালকে গুরুবাদ দোষে অভিযুক্ত করে বাংলার কবিদের বিপথে চালনার দায় চাপিয়েছেন। জহরদা, আপনার সাথে কাটানো দুরন্ত সন্ধ্যাগুলি, গরফায়, মনে পড়ে। আপনাকে বিনীতভাবে বলি বারীনদার গুরুদেবত্ব এখানেই যে, ওনার থেকে রাস্তার হদিস তারাই পেয়েছে যারা ওনাকে যুক্তিসঙ্গতঃ ভাবে নিরবিচ্ছিন্ন খিস্তি মারতে পেরেছে নিজের কাছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে। তোকে শালা মানবো না, তুই কে? দেখ আমিও নতুন পথ বাৎলাতে পারি বলে যে সার্থকভাবে নিজের ঝাঁট জ্বালিয়েছে, সেইই অজান্তে নিজের রাস্তা খোঁজার স্পার্ক পেয়ে গেছে। সেদিক দিয়ে আপনিও। মানুষ খাট-বালিশ-বিছানা চাদরের মধ্যে মহাভুল খোঁজে না, খোঁজে পিকাসোর পেইন্টিং বা সার্তের জীবনদর্শনের মধ্যে। (এই প্রসঙ্গে ঋত্বিকের বার্গমান নিয়ে একটা ইন্টারভিউ থেকে তুলে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা। বার্গম্যানকে জোচ্চোর বলেছি। বলতে গেলে অনেক কিছু বলতে হয়...... প্যাগান ফিলোজফিকে আনার জন্য ইমোশানাল সারচার্জ, গুরুদেব তৈরী... এই যে গুল - এগুলো কী? What is this Seventh Seal? Terrific জোচ্চোর বলেছি এই জন্য যে- জোচ্চোর তো যাকে তাকে বলা যায়না। জোচ্চোর কাকে বলবে? - One of the supreme brains, one of the supreme technicians, যে জেনেশুনে বদমায়েশি করছে। গাধাদের কাছ থেকে তো এটা আশা করা যায়না - যে জোচ্চুরি করতে জানে না। If he doesnt know the truth he cannot cheat. So knowing fully well he is cheating. Do you follow me?) বারীনস্তুতি নয়, এই কথাগুলোর বলা প্রয়োজন, জানা প্রয়োজন নতুন কবিতা বাংলা লেখাজগতের সবচেয়ে মেধাবী মুভমেন্টটির মোডাস অপারেন্ডিকে বুঝতে হলে। বারীন ঘোষাল গুরুদেব নয়, অগুরুদেব। যে তোমার চিন্তাভাবনায় চ্যালেঞ্জের অগুরু মাখিয়ে দেবে যাতে তার থেকে তুমি স্পষ্ট মৃতদেহের গন্ধ পাও আর হৃদয় নয়, মেধা নয়, খাস তোমার প্রাণের, অস্তিত্বের আঁতে লাগে। আর খোদ প্রাণ লাফিয়ে উঠে নতুন রাস্তা খুঁজে তার কলার চেপে ধরে কোন বাঁড়া বলে আমি মরদেহ??। সোনারি ওয়েস্টের আট নম্বর বাড়িতে প্যান-ফ্রায়েড কৌমার্য নিয়ে মহুয়া ঢুকে যায়। # এভাবেই আমরা ঢুকেছিলাম নতুন কবিতায়। অনেকে জিজ্ঞেস করে বেবীদা তুমি নতুন কবিতা করতে? বলি, কখনোই না, আমি এস এফ আই করতাম... এর কারন অনেকের ধারণা নতুন কবিতা বোধহয় একটা কলেজ বা লার্ণিং প্রোগ্রাম, যার থেকে ডিসটিংশান সহকারে অমিতাভ প্রহরাজ, ইন্দ্রনীল ঘোষ, অনুপম মুখোপাধ্যায়, অনির্বান চট্টোপাধ্যায়, দেবাঞ্জন দাস প্রমূখ পাস করে বেরিয়েছে। তাদেরকে ব্যাপারটা বোঝাই। আসলে বোঝার এই সঙ্কটটা হয় কারন আমাদের শঙ্খচূড় বাংলা কবিতার লিগ্যাসী দেখিয়েছিল মুভমেন্ট দু প্রকার, এক) বিশেষ যাপন নির্ভর দুই) বিশেষ এ্যাজেন্ডা নির্ভর। নতুন কবিতা এই দুইটির কোন একটিও নয়। এর কোন গন্তব্য ছিলনা, কোন ম্যানিফেস্টো না, বিশেষ জীবনযাপন না এবং সবার উপরে বিন্দুমাত্র জার্গন বা লেবেলিং না। যে জার্গন বা লেবেলিং এর অভ্যেস এখন কোথাও কোথাও লক্ষ্য করা যায়, তা নিখাদই মধ্যমেধার ফলে উদ্ভূত আধবোঝার ফল। নতুন কবিতা ছিল একটা সময় ও সেই সময়ে সবচেয়ে অব্যর্থ ও প্রয়োজনীয় চর্চার নাম। চর্যা নয়। সময়ের বৌ হল ঘটনা আর রাখেল হলো সঙ্কট। তো এই সঙ্কটের সাথে ইন্টুপিন্টু চালাতে গেলে বৌকে এক্কেবারে না জানিয়ে, কিছু চর্চা বা প্র্যাকটিসের প্রয়োজন পড়ে। আমরা অমোঘ পুনরাবৃত্তির সঙ্কটে পড়েছিলাম। এতদিন অবধি একে টক্কর নেওয়ার তরিকা ছিল ক্লাসিক বা ধ্রুপদী জাতের মধ্যে তাকে ঠেলেঠুলে ঢুকিয়ে দেওয়া। দিলেই সমস্যা শেষ। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি যুগে এসে ধ্রুপদের জিনা হারাম হয়ে উঠলো আর সে আত্মহত্যা করলো। কারন ঘটনার পপুলেশান বাড়তে বাড়তে বার্স্ট করে গেল, আর কোনটা ইনফর্মেশান বা তথ্য, কোনটা এক্সপিরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতা আর কোনটা রিয়ালাইজেশান বা বোধ, সব গুলিয়ে একাকার হয়ে গেল। ভিক্টোরিয়ার দুপুর রোদে প্রেমিকার প্রথম স্তনস্পর্শ করলো প্রেমিক, এক অনির্ব্বচনীয় অভিজ্ঞতা, সেটা হয়ে গেল ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ম্যামারি গ্ল্যান্ডের এপিথেলিয়াল লেয়ারের ওপর কতটা প্রেসার অপ্টিমাম এক্সাইটমেন্ট আনবে পিটুইটারিতে!! একটা ইনফর্মেশান। ফলে এই ঘোর অনাচারে দীর্ঘবিলাসী ধ্রুপদের কোন স্থান নেই। তাহলে এই অমোঘ পুনরাবৃত্তির সঙ্কট আটকানোর একটাই উপায় বেরোলো, নিরবিচ্ছিন্ন ও নিরঙ্কুশ নতুন উৎপাদন। এইখানে সবচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট, উৎপাদন এই ক্রিয়াটিই হলো মূখ্য। উৎপাদিত দ্রব্য নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। নতুন কবিতা মুভমেন্টের নামকরনে এই গন্ডগোলটা থেকে গেছে বলে পরে প্রচুর কনফিউসান তৈরী হয়েছিল। আসলে হওয়া উচিত নতুনভাবে কবিতা মুভমেন্ট। এই ভাবে টাকে যে যার প্রয়োজনীয়তা মতো চিহ্নিত করেছিল। মানে ধরা যাক a b c d e f g h I j k, এই দশরকম পুনরাবৃত্তি বা মনোটনি আক্রান্ত ছিল সেইসময়ের কবিতা। এবার দশটিকেই আমূল ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে তার কোন মানে নেই। কেউ a,b,g,h,I,k কে এ্যাড্রেস করবে ঠিক করলো, কেউ মনে করলো d,e,f,g,h,I থেকে মুক্তি পাওয়াটাই প্রধান লক্ষ্য। এভাবেই যে যার প্রয়োজন তৈরী করেছিল। এবং এর কোন লিখিত থাম্বরুল ছিলনা। কয়েকটা কমন অস্বস্তি ছিল, যেগুলোকে বারীন ঘোষাল কবিতাধারার মুক্তি নাম দিয়ে পয়েন্ট আউট করেছিলেন। এই যা। # গোড়ার কথায় ফিরি... তো এভাবেই আমরা নিজেদের মতো করে নতুন কবিতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলাম, আর সম্পর্কে নেমেছিলাম... কোথাও কোন বইতে লেখা ছিলনা, কোন স্যার বলে দেননি, কিন্তু কি অদ্ভূত ইন্দ্রনীল, আমি, অনির্বান, দেবাঞ্জন, আমরা ধীরে ধীরে ক্রিয়াপদ কমাতে লাগলাম, বিশেষণ-ক্রিয়াবিশেষণ বন্ধ করে দিলাম, উপমা রূপক অলঙ্কার এড়িয়ে গেলাম, মতো যেন ব্যানড করলাম, গল্প হটিয়ে দিলাম ইত্যাদি... একদিনে না, আত্তীকরণের মতো এসেছিল এই প্রসেস... এবং এই প্র্যাকটিস চললো বছরের পর বছর, প্রায় আট ন বছর ধরে... কেউ পদস্থলন হলে অন্যজন তার ভুল দেখিয়ে দিত... বাইরে থেকে মনে হবে যেন কন্ডিশন্স এ্যাপ্লাই কবিতা বা ইচ্ছে করে কবিতাকে প্রতিবন্ধী করা। কিন্তু বাস্তবে এটা একটা প্র্যাকটিস, শচীনের অফে একটাও শট না খেলে সেঞ্চুরি। একটা কনফিডেন্স জন্মানো নিজের মধ্যে যাতে সম্ভাবনা অসীম এই জিনিসটি হাতে কলমে ফীল করতে পারি। # এই হাতে-কলমে ছিল একটা জবরদস্ত হাতিয়ার। কলেজ থেকে নতুন কবিতা হয়ে যে জোনটায় পা রাখতে যাচ্ছিলাম তা হলো এক নতুন চিন্তাপদ্ধতি, স্বকীয় থট প্রসেস তৈরী করা লেখা সম্বন্ধিয়। তার জন্য প্রয়োজন পুরোনো থট প্রসেস কে হাতে কলমে বাতিল দেখানো। উপলব্ধি করা, উপলব্ধ দেখানো আর উপলব্ধি দেখানো। এদের মধ্যে প্রথমটি সময়ের অতিকায় প্রয়োজন থেকে জন্ম নিয়েছিল, দ্বিতীয়টি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছিল আর তৃতীয়টিই ছিল বোধকে মেধাকে চ্যালেঞ্জ। বুঝতে পারছিলাম কবিতার শুরু শেষ বলে কিছু হয়না। কি হয় তা নিয়ে বিস্তর মতবাদ ছিল, কেউ পৃথিবীর সব কবিতা একসাথে মিলে একটাই মহাকবিতা, কেউ কবিতার প্রতিটি পরমাণুই কবিতা, কেউ কবিতা আত্মা, ইত্যাদি। এ নিয়ে মাথাব্যথা ছিলনা, এগুলির অপশান তো ইনফিনিটি, মানে শুরু ও শেষ না থাকা মানে কবিতা কিরকম হতে পারে, তা তো অসীম সম্ভাবনা। বাংলা কবিতার অপূর্ব ভিলেনটি এ্যাসিড বাল্ব ছুঁড়ে দিয়েছিলেন আর আমি চ্যালেঞ্জ নিবিনা শালা বলতে উদগ্রীব ছিলাম... তো ফিরে গেলাম সেই স্যাঙাৎ এর কাছে। কাকে বলে ইন্দ্রনীল? ইন্দ্রনীল তো আমাকেই বলে, ওর কবিতা যত। আমার অলিখিতপূর্ব অলিখিতভবিষ্যৎ লেখাগুলিই তো ও লিখছে। আমার অভাবিতপূর্ব ও অভাবিতভবিষ্যৎ ই তো ওর... এখান থেকেই স্পার্ক, কবিতার শুরু ও শেষ নেই প্রমান করার সহজ উপায় তো শেষকে অশুরু বা শুরুকে অশেষ বলে দেখানো... এবং তার ফল এই চলো, সিঙ্গলহ্যান্ড যার উৎসর্গপত্রে যাকে বলে ইন্দ্রনীল, তাকে......... # পুনশ্চঃ নতুন কবিতা থেকে তো বেরিয়ে এসেছি বহুদিন কিন্তু নতুনভাবে কবিতায় মগ্ন আছি চিরকাল... নতুন কবিতা আমার হাত চিন্তা ভাবনা গড়েছে যাতে আমি ভেবে ফেলেছি নতুনভাবে কবিতা, এক নেভারএন্ডিং প্রসেস... ওই চর্চা সময়কার সেন্সরগুলিও তুলে নিয়েছি এক এক করে... নতুনভাবে ব্যবহারের জন্য... গতবছর ভালোপাহাড়ে পেলাম, পড়লাম সব্যসাচীর পসিবিলিটি টিসিবলিপ... পাহাড়ের মতো জীয়ো বেরোল বুক থেকে... এইতো নতুনভাবে... আমার চেয়েও নতুনভাবে
Posted on: Fri, 26 Sep 2014 05:32:35 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015