মিডল ব্রেক ( কেন্দ্র হীন - TopicsExpress



          

মিডল ব্রেক ( কেন্দ্র হীন বৃত্ত) সকাল ৯ টা...... ঃআম্মু!আর একটু ঘুমাই না! ঃনা!গত ২ দিন তুই কলেজ যাসনা।আজ না গেলে তোর আব্বুকে বলে দিব। ।। পৃথিবীতে আর কাউকে ভয় না করলেও রাহি তার আব্বুকে বাঘের মত ভয় পায়। মধ্যবিত্ত পরিবার এর ছেলে রাহি।ছোট বেলা থেকে অনেক আদর যত্নে বড় হয়েছে ও। আজকাল আলসেমি টা ওকে আকড়ে ধরেছে। । । যাই হোক আব্বুর ভয়ে ও উঠে ঘুমে টোলতে টোলতে বেসিন এ গিয়ে ব্রাশ এ পেস্ট লাগায়।ঘুম ঘুম চখে ব্রাশ করে প্রায় ২০ মিনিট পর বের হয়ে আসে।এসে দেখে টেবিল এ নাস্তা রেডি।আম্মু সেই ভোর বেলা উঠে নাস্তা তৈরি করেছে.........নাস্তা খেয়ে ও রেডি হয়ে কলেজ এর দিকে রউনা দেয়। ও স্থানীয় একটা সরকারি কলেজ এ পড়ে।ssc তে রেজাল্ট ভালো করায় ওর আব্বু ওকে ল্যাপ্টপ কিনে দিয়েছে...আর ও আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে একটা মডেম কিনেছে.........ক্লাস করতে ভাল লাগেনা ওর। কোন রকমে ২টা ক্লাস করেই সে বাড়ির উদ্দেশ্যে রউনা হয়।বাড়ি গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়েই ল্যাপ্টপ টা অন করে। ..............................নাহ আজ নেট এর স্পীড বেশি ভালো না।শুধু ডিস্কানেক্ট হয়ে যাচ্ছে............ একটু রাগান্বিত হয়ে সে তার ফেসবুক এ লগ ইন দেয়।।নিউজফিড এ ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ তার চ্যাট সাউন্ড বেজে ওঠে... হ্যা একজন তাকে নক করেছে... সপ্নের পরি... নাম টা দেখেই ভাল লাগে রাহির... চ্যাট বক্স এ ক্লিক করে......... ঃ হাই!হাও আর ইউ? ঃফাইন!.. ইউ? ঃভাল।।. ঃ আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না! ঃ না চিনলে মনে হয় চ্যাট করা যায়না? ঃ না !ঠিক তা নয়! আগে কখনো চ্যাট করি নাই তো তাই আর কি! ঃ আগে কখনো চ্যাট করেননি বলে কি চ্যাট করা যাবেনা? ঃ হ্যা যাবে! কিন্তু তার আগে নাম পরিচয় টা সেরে নেওয়া ভালো না? ঃ নাম; নিঝুম...বাসা ধানমন্ডি.........আর কিছু জানার দরকার হলে ইনফো তে গিয়ে দেখে নেন... .................................................ইনফো চেক করে.....আরে মেয়েটা তো ওর কলেজেই পড়ে।। কলেজ এ নিয়মিত না যাওয়াই সবার সাথে পরিচয় হয়ে উঠে নাই রাহির। ঃ হুম।দেখলাম...... বাট তুমি কন সেকশন এ? ঃ কমার্স... ইউ? ঃ সাইন্স... ঃ ও!সেই জন্য বোধহয় পরিচয় হয়নাই। ঃ হয়তোবা। ঃ ওকে নাও বাই। পরে কথা হবে। ঃ ওকে বাই। .........কিছুক্ষণ ওর প্রোফাইল ঘেটে শাটডাউন দিয়ে গোসল এ চলে যায় রাহি... লাঞ্চ সেরে আবার ফেবু তে বসে......চ্যাট বার এ খুজে সেই অচেনা মেয়েটিকে... এটি একটি সহজাত প্রবিত্তি...কারো সাথে এজটু পরিচয় হলে তার সাথে আরও পরিচয় হউয়ার ইচ্ছাটা চরমে ওঠে.তার উপরে যদি সে নিজের কলেজে পড়ে..... ...........................................................................নাহ ও এখন চ্যাট এ নেই। কি আর করার । বসে বসে মেয়েটার টাইমলাইন ঘাটে। এর মধ্যে কখন যে মেয়েটি চ্যাট এ এসেছে রাহি সেটা দেখেনি। চ্যাট এর টুইট শুনেই ও যেন ওর সম্বিত ফিরে পায়। ঃ আপনি কি ২৪ ঘন্টা অনলাইন থাকেন? ঃ কই না তো! কিছুক্ষণ হল আসছি...... ঃ ও! দুপুর এর খাওয়া হইছে? ঃ হুম! তোমার? ঃ হুম! তুমি কি আশিক কে চিনো? ঃ হুম চিনি! ক্যান আশিক কি তোমার বয়ফ্রেন্ড নাকি? ঃ আর এ না! আমাদের রোড এই থাকে ভাইয়ার সাথে ঘুরাঘুরি করে। তো তাই... আশিক ও সাইন্স এ! তাই জিগাইলাম... (হঠাত করে কখন যে ওরা নিজেদের মধ্যে তুমি করে বলা শুরু করছে ওরা নিজেরাই খেয়াল করে নাই...হয়তোবা বিধাতার খেলা এটি... কে কখন কার আপন হবে সেটা কি আর তুমি আর আমি বলতে পারি?...সে ক্ষমতা তিনি নিজ কাছেই রেখেছেন।মানুষের ক্ষমতার বাইরে এটি।).................. ...............এভাবে চ্যাট করতে করতে ওরা অনেক ভালো বন্ধুত্বে পরিনত হয়!...কলেজে এর মাঝে অনেক বার দেখা হয়েছে......এখন তাদের ভিতরের সম্পর্ক টা তুই তে উঠে এসেছে............... হাসি ঠাট্টা ঝগড়া সব কিছুই চলে ওদের মাঝে.................. নিঝুম একটু চঞ্চল......রাহি যেন দিনে দিনে তার উপর আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে...... তার চলাফেরা সব কিছুই এখন রাহির ভালো লাগে...... একদিন কথায় কথায়... ঃ ওই তুই প্রেম করিস না ক্যান রে? ঃ হঠাত এই কথা ক্যান? জরিনার মুখে? ঃ আইছে মোখলেস!... এ বলনা! ঃ ভালো লাগেনা! আর প্রেম করার মত এখনও কাউকে পাইনাই তাই করি নাই......ক্যান তুই কি কার প্রেমে ট্রেমে পড়েছিস নাকি? ঃ আরে নাহ! আমার দারা আর প্রেম! আকমার মত এত বদমেজাজি মেয়ের সাথে কে প্রেম করবে? ঃ অই তোর আজাইরা কথা বাদ দে! চল ক্ষুধা পাইছে ক্যান্টিন এ গিয়ে কিছু খেয়ে নেই! ঃ আচ্ছা চল!......। ____________________________ (বার্গার আর ডিউ এর অর্ডার দিয়ে ওরা ২ জন আবার মেতে উঠল ওদের সেই চিরচেনা ঝগড়া ঝাটিতে........................ঝগড়া ক করে আজ নিঝুম কে যেন একটু বেশি ই সুন্দরি লাগছে...কে জানে সেই দিণকার অচেনা সেই নিঝুম আজ তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হুয়ে উঠবে।।) ঃ ওই তুই আজ চখে কাজল দিয়ে আসছিস? ঃ বাব্বা! ছেলের দেখছি আজ কাল চোখ ফুটে উঠেছে...... ঃ ওই থাবা খাবি কিন্তু!(একটু লজ্জিত হয়ে) ঃ হুম! কিন্তু তুই আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কি দেখিস? প্রেম করার মতলব আছে নাকি? থাকলে বল আগে থেকেই কাইটা পড়ি!......... ......................................................।।(ফাজিল মেয়ে মুখে কিছুই আটকায় না।আসলেই চোখে কাজল দিয়ে আসাতে ওকে আজকে আরও বেশি সুন্দর লাগছিল......) ########### এভাবেই চলতে থাকে তাদের দিন। তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব টা আরও বেশি মজবুত হতে থাকে............ফেসবুক এ ওরা একে অপরের পার্টনার দিয়ে দিছে............... এখন ওদের মধ্যে এমন একটা বন্ধুত্ব সৃষ্টি হইছে যে ওরা একে অপরের কাছে সব কিছু শেয়ার করে.........কয়েক দিনের মদ্ধ্যে ওদের সম্পর্ক টা আরও এমন হয়ে গিয়েছে যে ওরা টয়লেট এ গেলেও একে অপরকে জানিয়ে যায়!......................................... এর মধ্যে রাহি আরও ফেসবুক এ অন্য ফ্রেন্ড এর সাথে চ্যাট করে......... নিঝুম এর সাথে বেসির ভাগ সময় ই চ্যাট করে...... হঠাত একদিন রাত্রে রাহির ফোন এ ভেসে ওঠে একটা নাম!... অনাকাঙ্ক্ষিত......... কারন সচারচার ওই নং থেকে রাত ১১:৩০ এর পরে কল আসেনা।এখন প্রায় ১২টা... ফোন এর সবুজ বাটন টা প্রেস করে বাম কানে ধরে রাহি......... ঃ ভাল আছিস? ঃ হটাত এই কথা! ...কিছু খাইছিস নাকি? ঃ হ্যা এখন তো তোর কাছে এ রকম ই মনে হবে...।...পার্টনার লিস্ট এ নতুন নতুন কেউ অ্যাড হলে তো মানুষ এর কাছে এমন মনে হবেই............... ঃ তার মাআআআআ (ধাম করে মনে পড়ে গেল। এক্টু আগে ওর ই এক ক্লাস ফ্রেন্ড(মেয়ে) কে ও পার্টনার হিসেবে যোগ করেছিল...) ঃ হ্যঁ! সেটাই... জানি আমি কি বলতে চাচ্ছি তুই বুঝতে পারছিস... শোন ছোট বেলা থেকে একান্ত নিজের জিনিস কাউকে শেয়ার করি নাই। সরি রে আজকেও তোকে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবনা......সরি রে... আমি একটু এ রকম ই... হয়তো আমাকে না জানিয়ে যেমন তুই ওকে তোর পার্টনার লিস্ট এ ঢুকাইছিস তেমনি হয়ত আমার জায়গাটা ওকে দিয়ে ফেলবি............... ঃ রাহির মুখ দিয়ে একটা আওয়াজ বের হয় না!( সে বুঝতে পারে নিঝুম এর বিষয় টা অনেক খারাপ লেগেছে.........কিন্তু এখন রাহি বুঝাতে গেলেই ওর মাথা আর ও গরম হয়ে যাবে। তখন হিত এর বিপরিত হয়ে যেতে পারে। ) ঃ শোন রাহি! এখন রাখ! কাল তোর সাথে কথা হবে বাই!......ও হ্যাঁ আমাকে না জানিয়ে ওকে যখন পার্টনার এ যোগ করছিস তখন আমাকে ও হয়তো না জানিয়ে আমার জায়গা দিয়ে দিতে পারিস। আর আমি আমার বন্ধুকে কারো সাথে এমন ভাবে শেয়ার করতে পারবনা...... গুড নাইট... আমার জায়গাটা ওকে দেয়ার আগে আমাকে জানাস .........রাহি কিছু বলার আগেই কেটে যায় ফোন টা .........রাহি ভাবে কি করবে সে। আচ্ছা মেয়েটা এত টা ভেঙ্গে পড়ার কারন কি? তাইলে কি নিঝুম ও আমাকে সত্যি সত্যি ভালবাসে?......... ঘুম আসেনা রাহীর চোখ এ......এসব কীছূ ভাবতে ভাবতে রাত প্রায় ৩ টা বাজে......... ফোন টা হাতে তুলে নেয় রাহি............মেসেজ অপশন এ গিয়ে টাইপ করতে থাকে সে......... [asca tui ki pagol?emon kore kew mon kharap kore?..tui e to amar best frnd.toke sara ki ar kauke amar hridoyer best frend er jaygata dite parbo?....jotota toke valobasi totota ki r kauke valo baste parbo?...... toke haranor isca amar nai.kron ajkerdine tor moto frnd paoa onek koster.ar oi meyeta amar section ei pore. Emni porichoy. Ahamori kisu na eta niye eto mon kharap korar kisu nei.ar son toke haranor onek voy re amar. Kenona Jodi voy na na thakto tahole ami onek agei toke bolte partam will u marry me? But bolte pari nai keno Janis? Pase tui Jodi amay vul bujhe amar theke dure cole jas. Jani ekhon tui ghum kin2 eta likhsi karon ami ghumate parcina. Kenona ak joner best frnder mon kharap kore thakle tokhon ki art ekjon ghumiye thake? Ok good n8. Ami ok partner list theke remove marsi..and unfrnd o korsi.] এটা সেন্ড করেই রাহি একটু চোখ বুজে।। কিন্তু আজ ঘুম দেবি তার চোখে ধরা দিচ্ছেনা।আজ তার চোখে অন্য আর এক দেবি। হ্যাঁ তার ই দেবি......।। নিঝুম। হ্যাঁ কত সুন্দর করে হাসে ও! হাসলে ওর গালে একটা টোল ও পড়ে ! এটাতে ওর সৌন্দর্য বাড়ে বৈকি কমে না...... হটাত করে মেসেজ এর ভাইব্রেশন হয়। স্ক্রীন অন করে দেখে নিঝুম মেসেজড ইউ....[ghumas nai?]..... ওহ মাই গড তার মানে নিঝুম এখনও ঘুমাই নাই! ফোন দেয় নিঝুম এর কাছে............এক রিং হউয়াতেই ফোনটা রিসিভ হয়। ঃ এখন ও ঘুমাস নাই? ঃ ক্যামনে ঘুমাই? তুই কি ঘুমানোর কোন পথ রাখছিস? ঃ আমি আসলে সরি রে। এটার জন্যে তোর যে এতটা মন খারাপ হবে আমি বুঝি নাই। ঃ মন খারাপ কেন হয় তা যদি তুই বুঝতিস তাইলে তো সূর্য উত্তর দিকে উঠত.........ওই ভালো কথা তোর মাথায় এই পাগলামি আবার কবে থেকে আসল আমাকে প্রোপজ করার কথা? ঃ জানিনা!... ঃ তাইলে তুই আমাকে তখন বলিস নাই ক্যান? ঃ তুই যদি আমাকে ভুল বুঝস আর যদি আমাদের ফ্রেন্ডশিপ টা নষ্ট হয়ে যায়? ঃ একবার তো বলে দেখতে পারতিস। ঃ না! তাও ভয় করছিল। ঃ ওই আমি কি তোকে ছেড়ে যেতাম?...... এখন তো আর ভয় নাই! এখন বল ঃ কি বলব? ঃ অই যে তখন কি বলতে চাইছিলি! ঃ তখন বলতে চাইসিলাম কিন্তু এখন ত বলতে চাইনি ঃ ঃ@ তার মানে কি তুই এখন আমাকে ভালবাসিস না? ঃ মার খাবি কিন্তু নিঝুম! ঃ খাইলে খাব!।। বল! ঃ না! এখন ঘুমা! ঃ না বলা পর্যন্ত আমি ঘুমাচ্ছিনা! তুমি মনে মনে একটা কথা লুকিয়ে রাখবা আর আমি সেইটা না জেনেই ঘুমাব তুমি ভাবলা ক্যামনে? ঃ ন্যাকামি বাদ দিয়ে কোল বালিস টা কাছে নিয়ে ঘুমা! ঃ রাহি এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে! বল। নইলে এখন তো ঘুমাবই না আর কাল না খেয়ে কলেজে আসব!। ঃ আচ্ছা বলতাছি! হাসবিনা কিন্তু! ঃ আচ্ছা! ঃ অই যে তুই হাস্তেছিস! ঃ কই! আন্টি তোর কান পরিস্কার করে দেয়না? কানে কম শুনিস ক্যান? বল! ঃ উইল ইউ ম্যারি মি? ঃ হি হি হি হি! রাখ কাল সকালে ফোন দিবোনে! ঃ হ্যালল্লল্লল্ল।।(ফোন টা কেটে গেল) ...........................................................................রাহি ভাবত রাজি না হয় তাহলে কি ওদের আগের মত বন্ধুত্ব থাকবে?...।। এই বলতে বলতে যে কখন রাহির চোখে ঘুম নামে রাহি নিজেই টের পায়না!.........। {ইউ মাই পামকিন পামকিন হ্যালো হানিবানি}......... এত ৭ সকালে ফোন দেওয়ার মত কেউ নাই তো রাহির......ঘুম এর মধ্যেই রাহি ফোন টা রিসিভ করে। ঃ হ্যালো কে? ঃ এর মধ্যেই ভুলে গেলি?...তাতো যাবি ই! পার্টনার লিস্ট থেকে সরে গেলেও সে কি আর আপনার মন থেকে সরেছে? আমাদের কি আর এখন চিনতে পারবেন?... বলেই হাসির ধ্বনি শুনতে পায়! ঃ ও তুই? এখন ও মাফ পাইনি আমি? ঃ ওঠ! নামাজ এ যা!... ঃ বাব্বা এত পরিবরতন!... নতুন কাউকে পাইছিস নাকি? ঃ হ্যাঁ পাইছি তো! এই যে যার সাথে কথা বলছি! ঃ এই শুনে রাহির মনে আর আনন্দ ধরে না!...... ____________________ ____________________ ____________________ ____________________ ___________এখন রাহি রেগুলার সময় মত নামাজ পড়ে ,কলেজ এ যায়...... নিঝুম এর পাশে পাশে হাটে। একটু বেশি টেক কেয়ার করে ওর নিঝুম!.............................. বন্ধুত্য আর প্রেম ২ টা মিলে যেন আমে দুধে মিশ্ছে.........ওরা এখন কলেজ শেষ হলেই একসাথে বাসায় ফিরে!...... নিঝুম কে ওর বাসায় পৌছিয়ে দিয়ে তার পরে রাহি বাড়ি ফিরে...... রাহির ভিতর এই রকম নিয়মানুবর্তিতা দেখে রাহির মা খুব ই খুশি.................. মনে মনে রাহির মা ভাবে তার ছেলে যে কন পরশ পাথরের ছোঁয়ায় এই আমুল পরবরতন সাধিত হয়েছে তা আল্লাহ ই যানে.................. দাগ থেকে যদি দারুন কিছু হয় তাহলে তো দাগ ই ভালো!.................................... ফোন এ তাদের প্রতিটা মুহূর্ত খবর নেওয়াই চাই। একটু দেরি হলেই চিন্তার বিশুব রেখা ফুটে ওঠে তাদের মুখে......... আর প্রতিটা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তো লাভ ইউ বলাই চাই! না হলে রাতের তারারা ঘুমিয়ে পড়বে কিন্তু ওই ২টা রাত জাগা পাখির মত নিরঘুম চোখে তাকিয়ে থাকবে আকাশের পানে...... কোন প্রত্নতাত্মিক গবেষণার আশায় যে ওরা দূর আকশে তাকিয়ে থাকে সেটা আপনার আমার বোঝার উপায় নাই।...... একদিন এমন ও হইছে কলেজ এ সামার ভ্যাকেশন চলছে......... ২ দিন তারা দেখা করতে পারি নাই! ওইদিন রাতে রাহির এত পরিমানে মনে পড়েছে নিঝুমকে যে সে রাতে রাহি নিঝুম দের বাড়ির সামনে গিয়ে নাইট গার্ড এর ঝাড়ি শুনে এসেছে...... তাও তো এক্টিবার নিঝুম রে দেখতে পেরেছে. ............................................................. এভাবেই চলছে তাদের বন্ধু এবং ভালোবাসা নামের রেল গাড়িটি............।। ওদের রেলগাড়ির কোন ষ্টেশন নেই!......... আর কোন গন্তব্য স্থান ও নেই........................ মাঝে মাঝে হুইসেল বেজে ওঠে। । ....................................................................................................... ১০ ই মার্চ...... আজ সকাল থেকে নিঝুম এর একটু মন খারাপ...... রাহির হয়তো মনে নেই যে আজ নিঝুম এর জন্মদিন...... অনেক কাজের চাপে হয়তো ভুলে গেছে... সকাল থেকে রাহির সাথে ওর কথা হয়েছে কিন্তু রাহি ওকে একবার ও উইশ করে নাই।শুধু বলছে ও একটা কাজে ব্যাস্ত! কি সে কাজ সেটা শুনতে চাইলে রাহি এড়িয়ে যায়!......... একটু মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে কলেজ এর দিকে পা বাড়ায় নিঝুম। পথে রিকশায় বসে অনেক বার ফোন দিলেও ফোন টা বেজেই গেলো! ফোন টা ধরার লোক কি আজ নাই নিঝুম এর জন্য? ওকে অবহেলা করছে ক্যান? এটা কি তাহলে নিঝুম এর জন্যে রাহির বার্থডে গিফট?...। কিন্তু রাহি তো এমন কখনও করবেনা। বরং রাহি আরও রাগ করে কলেজ এ যাওয়ার সময় ওর সাথে কথা না বললে। কিন্তু আজ কি হয়েছে? একটি বারের জন্যে ও রাহি ওর ফোন ধরছেনা!.........। কত লোক আজ ওকে উইশ করল কিন্তু ওর সবচেয়ে কাছের যে মানুষ যাকে সারাজীবন কাছে পাবার আশায় প্রত্যয়ী সে তাকে আজ একটি বারের জন্নেও ফোন দিলোনা? ভাবতে ভাবতে কলেজ এর গেট এ প্রবেশ করে নিঝুম। নাহ ক্যাম্পাস এ পরিচিত কাউকে না দেখতে পেয়ে ক্লাস রুম এর দিকে হাটা শুরু করল নিঝুম..................... কিন্তু ক্লাস রুম এর ভতর এ অনেক ব্যাগ দেখা যাচ্ছে কিন্তু কাউকে দেখছেনা ক্যান সে? ক্লাস রুম এর ভিতর ঢুকতেই ধাম করে কিসের আওয়ায হল আর নিঝুম এর সারা দেহ ভরে গেল জরিতে......... সব বন্ধুরা একসাথে বলে উঠল হ্যাপিবার্থডে টু ইউ...... ও ঠিক তখন ই আবিস্কার করল রাহিকে ওদের মধ্য মনি হিসেবে। তার মানে রাহি সকাল থেকে এই কাজেই ব্যাস্ত ছিল?... একটি বারের জন্য কি বললে আমি এই কাজে ডিস্টারব করতাম?...... ওর মনে আর আনন্দ ধরেনা। কারন কলেজ এর ওদের ক্লাস এর সাইন্স কমার্স আর্টস সবাই ওকে উইশ করছে। এটা ওর জিবনে এক স্মরণীয় জন্মদিন হয়ে থাকবে.........ও আনন্দে সবার মাঝ থেকে দৌড়ে গিয়ে রাহি কে জড়িয়ে ধরল। এতোটা ভালবাসিস ক্যান রে তুই আমায়?......... ঃ তুই যদি বলিস আজ আকাশে কয়টা তারা উঠবে সেটা আমি তোর জন্য গুনে দিতে পারব কিন্তু বলতে পারবনা ক্যান আমি তোকে ভালো বাসি......... এভাবে জড়িয়ে ধরে রেখে কিছু সময় পর ওদের মনে পড়ল ওরা সবার সামনে! একটু লজ্জিত হল। কিন্তু ওদের মধ্যে যে অগাধ ভালবাসা সেটা ক্লাস এর সবাই বুঝল।......কেক কেটে অনেক মাস্তি করল ওরা .....................এভাবেই চলছে পাগল আর পাগ্লি ২ টার প্রেম। প্রেম এর পাশাপাশি ওরা পরাশোনাও করেছে ঠিক মত। তার ফলস্বরূপ তারা উচ্চমাধ্যমিকে এ + পেয়েছে।নিঝুম পেয়েছে গোল্ডেন। এখন ওরা ভার্সিটিতে পড়ে। ভালো রেজাল্ট করায় রাহির বাইক এর আবদার রাহির আব্বু ফেলতে পারে নি!......... তাই ওকে একটা বাইক কিনে দিয়েছে। এখন ওদের কোথাও ঘূরতে যেতে প্রব্লেম নেই!........................... ১৪ই ফেব্রুয়ারি...... ঃ ওই তুই আজ নিল শাড়িটা পরিস। ঃ তুই সাদা শার্ট টা পরিস। আর হ্যাঁ আমি ৯টার দিকে রানা মামার দোকানের একটু সামনে দাড়াবো তুই ওখান থেকে আমায় নিয়ে যাস......... ।_____________________ যথা সময়ে ২ জন বাড়ি থেকে বের হয়ে একত্র হল। ............বাইক টা আজকে একটু বেশি স্পিডী মনে হচ্ছে! ওই সাবধানে চালাস! ...... তুই আছিস না আমায় আর কে রাখে......... টিএসচি চত্বর থেকে ওরা এবার ঠিক করল লং ড্রাইভ এ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। আজকে ওরা ঢাকার বাইরে যাবে। হ্যাঁ! লাইসেন্স আছে!কিন্তু আসার সময় হেল্মেড টা বাসায় ফেলে এসেছে!...... .................................... থাক এত দিন যখন কিছু হইনাই আজকেও কিছু হবেনা।ওরা চলছে। কালো পিচের বুক চিরে নিল শাড়ি আর সাদা শার্ট এ ভালই লাগতাছে ওদের! হঠাত কোথা থেকে যে একটা ট্রাক চলে আসল ওদের সামনে রাহি খেয়াল ই করে নি! হাইড্রলিক ব্রেক টা নেহাত ই তুচ্ছ মনে হল ওদের স্পিড এর কাছে। ব্রেক টার মবিল পাস করে নাই! ...... সব কিছু অন্ধকার ! আলো কই? আলো? নাহ নাই! প্রদিপ ২ টা নিভে গেছে। এখন হাজার চেস্টা করলেও আলো খুজে পাওয়া যাবেনা!......... হ্যাঁ ওরা শপথ করেছিল একে অপরকে কখন ছেড়ে যাবেনা! ওরা ওদের কথা রেখছে!...... একে অপরকে ছেড়ে কোথাও যাই নাই!... আর যাবেওনা!চিরকাল একসাথে ঘুমাবে তারা!............... ।এমন ই মাঝ পথে থেমে যায় তাদের রেলগাড়ি ষ্টেশন ছাড়া।®®® সুতরাং জীবনে চলার পথে অনেক সময় উত্তেজনার বশে অনেক কিছু করে বসবেন! কিন্তু এগুলো করার আগে একটু আগে পিছে ভাবেন!। হাজার চেষ্টা করলেও কি রাহির আম্মু রাহিকে ফিরে পাবে? নিঝুম আর রাহি কি আগের মত সেই ঝগড়া করতে পারবে?...... তাই বলছি জীবন অনেক মূল্যবান! এটাকে একটু মুল্লায়ন করুন!... যদি একটু সাবধানে রাহি বাইক টা চালাতো তাহলে আজ কে ও ওদের ভালবাসায় ভরে উঠত টিএসছি চত্বর............................................................... ভালো থাকিস তুই আমার সাথে।•®k
Posted on: Sun, 14 Jul 2013 07:00:01 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015