২০১৪-১৫ সেশনে - TopicsExpress



          

২০১৪-১৫ সেশনে নোবিপ্রবিতে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের ফার্মেসী বিভাগের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক আভিনন্দন। নোবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ফার্মেসী বিভাগ Sdশুধু একটি ডিপার্টমেন্ট নয়, এটি এইখানে ফার্মেসী পরিবার হিসেবেই পরিচিত। এই পরিবারে এই পর্যন্ত নয়টি ব্যাচ আছে,যার মধ্যে থেকে চারটি ব্যাচ কৃতিত্বের সাথে অনার্স ডিগ্রী এবং তিনটি ব্যাচ মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করে। তারা বর্তমানে দেশ ও বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে কর্মরত আছেন। আমদের ফার্মেসী ডিপার্টমেন্টে রয়েছেঃ ১। সুপ্রশস্ত এবং আধুনিক পরিবেশের মানসম্মত ক্লাশরুম ২। পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা ৩। আমাদের আছে ফার্মা ক্লাব ৪। ফার্মা ব্লাড ডোনার ক্লাব ৫। ফার্মা কালচারাল ক্লাব ৬। ফার্মা ক্যারিয়ার ক্লাব শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দঃ আমাদের ডিপার্টমেন্টে সহযোগি অধ্যাপক, সহকারি অধ্যাপক এবং প্রভাষক সহ মোট ১৫ জন শিক্ষক আছেন। ফার্মেসী বিষয় নিয়ে কিছু কথা এবং ফার্মেসীতে পড়ার অভিজ্ঞতার আলোকে: ফার্মেসী, এই বিষয়টির বহুল চাহিদা শুধু আমাদের দেশে নয় বিশ্বের সবদেশেরই অন্যতম বিষযগুলো একটি হলো এই ফার্মেসী।Pharmacy is one of the ranked subjects in the whole world. পৃথিবীর অনেক দেশে যেমন: আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং ইউরোপের অনেক দেশেই ফার্মেসী প্রথম সারির একটি বিষয় হিসেবে পরিচিতি এবং এই বিষয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের ভালো ক্যারিয়ার গঠন করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৪ সালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ফার্মেসী বিভাগ জব্বার স্যারের হাত ধরে। ওই সময় একটা অঘোষিত প্রবাদ ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসীতে পড় আর আমেরিকায় চলে যাও। এই স্লোগানটি ছিল, Admit to Pharmacy, Fly to America। আক্ষরিক অর্থেই একটা সময় ছিল যখন ফার্মেসি থেকে সাধারন অনার্স বা আন্ডারগ্রাড পাস করা মানেই আমেরিকায় যাওয়া নিশ্চিত। অনেক বছর ধরে এই বিষয়টিতে পাঠদান করার সুযোগ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমিত সংখ্যক কিছু আসনে চান্সপ্রাপ্ত ছাত্র- ছাত্রীদের, যা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল খুব অপ্রতুল আমাদের দেশে। এর পরে ক্রমে এই বিষয়টি চালু হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর ২০০৬ সালে ফার্মেসী বিষয়ে পাঠ্যক্রম চালু হয়ে আমাদের নোবিপ্রবিতে, দেশের পঞ্চম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। এখন জানা যাক, ফার্মেসী এবং ফার্মাসিস্ট বলতে কি বোঝায়? আমাদের দেশে ফার্মেসী বলতে আমরা বুঝি ওষুধের দোকান বুঝি আর ফার্মাসিস্ট বলতে যারা ওষুধ কোম্পানিতে ওষুধ বানায়-তাদেরকেই বুঝি। আসলেই কি তাই? ফার্মেসি প্র্যাকটিস বা এই পেশাটির গুরুত্ব চিকিৎসা বিজ্ঞানে যে কতখানি গভীর তা একটুখানি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন আছে। ফার্মেসি প্র্যাকটিস বা চর্চা সম্পর্কে খুব সাধারণভাবে বলতে গেলে হসপিটাল বা ক্লিনিক্যাল ফার্মেসিকে বুঝায় যেখানে রোগ ব্যবস্থাপনা, পথ্য ব্যবস্থাপনা, ওষুধ সংক্রান্ত নির্দেশনা, ওষুধের অপব্যবহার রোধ, ওষুধ-ওষুধ মিথস্ক্রিয়া, ওষুধ-খাবার মিথস্ক্রিয়া, রোগীর শারীরিক সক্ষমতার ভিত্তিতে ওষুধ নির্বাচন-প্রয়োগ পর্যবেক্ষণ, ওষুধ সংক্রান্ত গবেষনা এবং এটির উন্নয়ন ও প্রয়োগবিধি নির্দেশনাকেই বুঝায়। আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে, আমাদের জানামতে বর্তমানে এই পেশার কিছু Carrier Opportunity নিম্নে উল্লেখ করলাম: ক) শিক্ষকতা: অনান্য বিষয়ের মতো, এই বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সুযোগ থাকে। এই ক্ষেত্রে রেজাল্ট হতে হবে ভাল অর্থাৎ ভালো সিজিপিএ তুলতে হবে এবং গবেষণার কাজে অনেক বেশী সময় দিতে হবে এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য ইচ্ছা থাকতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে ফার্মেসী পড়ানো হয়। এই সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অনেক সুযোগ থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠ সম্পন্ন করার পরে। খ) বিসিএস: এই বিষয়ে বেশি কিছু বলার নাই আমার। আমার মনে হয় সবাই এই বিষয়ে অনেক বেশি জানে। তবে বলার প্রয়োজনে আমি বলব, “It’s a powerful profession in our Bangladesh, you may start your carrier as a administrative personnel.” এই পেশার জন্য ফার্মেসী পড়তে হয় এমন না, এই ক্ষেত্রে অনান্য সকল বিষয়ের মতো স্নাতক সম্পন্ন করার পর আবেদন করার সুযোগ থাকে। তবে ফার্মেসী বিষয়ে অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটা সীমাবদ্ধতা থেকে যায়, তা হলো এই বিষয়ে অধ্যায়নরত ছাত্র- ছাত্রীরা শুধুমাত্র বিসিএস জেনারেল বিভাগে আবেদন করার সুযোগ থাকে। গ) Pharmaceutical Industry: Pharmaceutical Industry হল ফার্মাসিস্ট হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার উন্নয়নের একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র। তবে অনেকে এ ক্ষেত্রকেই ফার্মাসিস্টদের মূল কর্মক্ষেত্র বলে মনে করে যা আসলে সঠিক নয়। ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে একজন ফার্মাসিস্ট বিভিন্ন ঔষধ ও তার প্রেস্ক্রিপশন তৈরি, নতুন মেডিসিন আবিস্কার, রাসায়নিক ও অন্যান্য স্বাস্থ্য বিষয়ক দ্রব্য উৎপাদন, এগুলোর বিপনন ব্যবস্থা, গুণগত মান উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ, মার্কেটিং রিসার্চ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করে থাকেন। প্রযুক্তিতে দক্ষতাপূর্ন ফার্মাসিস্টগণ এই খাতে প্রচুর নিয়োগ পান। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থানের পেক্ষাপটে যদি বলা যায়, আমার জানা মতে বাংলাদেশের প্রায় ৮০% ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে ফার্মাসিস্ট হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্পে একটি স্বয়ং সম্পুর্ণ দেশ। আমার আমাদের চাহিদা মিটানোর পর বিশ্বের অনেক দেশে সফলতা এবং সুনামের সাথে প্রতি বছর ঔষধ রপ্তানি করে আসতেছি। ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে ফার্মাসিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা যায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে, যেমন: 1. Production Officer/Executive 2. Quality Control Officer/Executive 3. Quality Assurance Officer/Executive 4. Product Development Officer/Executive 5. Product Management Officer/Executive 6. Product Sales Executive 7. Drug Administration (DA) 8. Research & Development উপরোক্ত পদবীর যে কোন একটি দিয়ে একজন ফার্মাসিস্ট তার ক্যারিয়ারে পথচলা শুরু করতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশে মান-সম্পন্ন ঔষধ তৈরী করে এমন কোম্পানী সংখ্যা প্রায় ১০০ এর উপরে, এছাড়া মোট ছোট বড় মোট কোম্পানী সংখ্যা প্রায় ২6৬০ এর মতো। ফার্মেসী বিষয়ে স্নাতক শেষ করার পর পরই এই সব পদবীতে ক্যারিয়ার শুরু করা যেতে পারে। ঘ) Corporate Post: খুবই কম মাত্রায় এই পোষ্ট এর অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়। তবে দিন দিন এর প্রসরতা বাড়তেছে এবং সামনে আরো বাড়বে বলে আমাদের বিশ্বাস। বাংলাদেশে কিছু Chemical Company, Raw Material Supplier, Machinaries Supplier এবং ঔষধ সম্পকীয় অনান্য প্রতিষ্ঠান তাদের Corporate Post গুলোতে ফার্মাসিস্টদের নিতে আগ্রহ প্রকাশ করতেছে। একজন ফার্মাসিস্ট তার ক্যারিয়ার এখান খেকেও শুরু করতে পারে। বাইরের দেশের প্রেক্ষিতে আরো কয়েকটি carrier opportunity-র প্রসঙ্গ নিম্নে উল্লেখ করলাম। এই গুলা আমাদের দেশে এখনো দৃশ্যমান না, তবে নিকট ভবিষ্যতে হবে কিনা আমাদের জানা নেই। সকল সম্ভবনার দেশ নয় বাংলাদেশ। কমিউনিটি ফার্মেসি (Community Pharmacy) বিশ্বের প্রতি দশজন ফার্মাসিস্ট এর প্রায় ছয়জনই কমিউনিটি ফার্মেসি কে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্ট একাধারে একজন স্বাস্থ্যকর্মী এবং সেই সাথে একজন খুচরা বিক্রেতা। তাঁর থাকবে একটি বিতরণ বিভাগ যেখানে তিনি তাঁর ফার্মেসি পেশা অনুশীলন করবেন, প্রস্তুতকৃত মেডিসিন রোগীদের মাঝে বিতরণ করবেন, তাদেরকে স্বাস্থ্য ও মেডিসিন বিষয়ক বিভিন্ন জ্ঞান দান করবেন ইত্যাদি। এক কথায়, এ ক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্ট স্বাধীনভাবে নিজের ক্যারিয়ারের উন্নয়ন করতে পারবেন। হসপিটাল ফার্মেসি (Hospital pharmacy): এক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্ট একজন ডাক্তারের মত সরাসরি রোগীর স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত হন। বর্তমানে অনেক দেশেই ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে একজন ফার্মাসিস্টকে গুরুত্বের সাথে অন্তর্ভুক্ত করে একটি মেডিক্যাল টীম (Medical Team) গঠিত হয় যাঁরা কিনা সমন্বিতভাবে হাস্পাতালে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। হাসপাতালে একজন রোগী সঠিক সময়ে সঠিক ঔষধটি পাচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা, রোগীদের উপর ঔষধের কার্যকারীতা, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ফলাফল লিপিবদ্ধ করা ইত্যাদি হল এই খাতে নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট এর দায়িত্ব। সম্মানজনক এই পেশায় ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেনেজ্ড্ কেয়ার ফার্মেসি (Managed care pharmacy): স্বাস্থ্যসেবার এই খাতটি নতুন অথচ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন একটি খাত। ম্যানেজড্ কেয়ার বলতে স্বাস্থ্যসেবার এমন একটি পদ্ধতিকে বোঝায় যা কিনা স্বাস্থ্যসেবার মূল্যমান কমিয়ে আনবে কিন্তু স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মানকে করবে আরো উন্নত। এরকম সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে বলা হয় ম্যনেজড্ কেয়ার অর্গানাইজেশন (MCO). এ ধরনের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের জনপ্রিয়তা আশ্চর্জজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রফেশনাল ফার্মাসিস্টগণ ব্যাপক হারে নিয়োগ পাচ্ছেন। আর যদি বাইরে দেশে যাবার ইচ্ছা থাকে, তাও যেতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অনেকাংশ কঠিন হয়ে পড়েছে, এইটা মানতে হবে। এখন আগের তুলনায় প্রতি বছর আমাদের হাজার হাজার ফার্মাসিস্ট বাহির হচ্ছে। বাইরে দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য অথবা ক্যারিয়ার গঠন করতে চাইলে কি কি করণীয় তা NSTU PHARMACY গ্রুপে অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করা হচ্ছে প্রতিদিন। আমাদের জানা মতে এত সুন্দর করে আর কোথাও এই ইনফরমেশান গুলো আপনারা পাবেন না। এখন আসুন ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে ফার্মাসিস্ট হিসেবে ক্যারিয়ার নিয়ে কথা। এই সেক্টরে কাজ করতে হলে আপনাকে অনেক বেশী সচেতন হতে হবে এবং অনেক বেশী দায়িত্ববান হতে হবে। আর তাই আপনাকে অনেক বেশি সময় দিতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, যা অনান্য পেশার তুলনায় নিতান্তই বেশী। এই পেশাটা হলো একটা দায়িত্বের পেশা, আপনার উপর নির্ভর করতেছে, দেশের এবং দেশের বাইরের হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি মানুষের সুস্থতা। একটি প্রবাদ আছে, একজন ডাক্তার ভুল করলে একজন রোগি মারা যাবে, কিন্তু আপনি ভুল করলে একজন মারা যাবে না, মারা যাবে হাজার হাজার, তাই এই বিষয়টি সবসময় মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। আজ এই পর্যন্তই। ভাল খাকবেন সবাই। কার্টেসীঃ সাব্বির ও সাজিদ (ফার্মেসী ৬ষ্ঠ ব্যাচ) #আআনস্মার্ট_ছেলে
Posted on: Mon, 29 Dec 2014 16:28:39 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015