অবশেষে তাহলে আসলো ২৫ অক্টোবর ? প্রতি বছর এই দিন টা আলাদা করে মনে রাখি সত্যি , সেটা আমার জন্মদিন সেজন্য। তবে এবার এই দিনটা মনে রাখার কারণ অবশ্যই অনেক । কিছুদিন আগে যখন বি এন পি ঘোষণা দিল যে ২৫ অক্টোবর তারা কি কি করবে - এত খারাপ লাগত যে বিরোধীদলীয় নেত্রী কি আর দিন পেল না ? বছরের ৩৬৫ টা দিনের মধ্যে এই দিনটাই তার বেছে নিতে হইল ? আজকে স্বাধীনতা উদ্যানে সমাবেশ করছে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। এটা সেই বি এন পি না - কিছুদিন আগে যে নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল বলে দাবি করে জিয়াউর রহমান ছাড়া আর সবাই কে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে কথা বলার মত ধৃষ্টতা দেখাল এটা সেই বি এন পি না ? এরা পল্টনেই সমাবেশ করত - স্বাধীনতা উদ্যানে কেন ? যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল , বাংলাদেশের বিজয় ইতিহাস লেখা হয়েছিল যেখানে , সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজকে তারা যুদ্ধাপরাধীদের ছবি নিয়ে সমাবেশ করছে । এর চেয়ে বড় লজ্জার আর কি হতে পারে ?তবে খুশির কথা হইল বৃস্টির কারনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে সমাবেশের মূল মঞ্চের আশে পাশেই এখনও তেমন একটা লোকজ়ন জমে নি। আর শাহবাগে রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। নিরাপত্তার মধ্যে নিয়ন্ত্রিত আকারে সামান্য কিছু যান চলছে। যাক , আমাদের শাহবাগ কে ওরা অপবিত্র করতে পারবে না । জানি , আমাদের ছোট্ট সবুজ দেশটাতে এর চেয়েও লজ্জার আরও অনেক কিছুই হয়েছে । একসময় এরা মন্ত্রী হয়েছে , যেই নিরীহ মানুষগুলোকে , বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষগুলোকে ওরা হত্যা করেছে সেই শহীদদের রক্তে ভেজা পতাকা এই খুনিদের গাড়িতে একসময় উড়েছে , আর একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলের গাড়ি থেকে তা চেয়ে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন । এরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলা মাএর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে , স্বাধীনতার পর হত্যা করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে । মা জাহানারা ইমাম এই রাজাকারদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলায় তাকেও অপমান করতে বাধে নি এদের , মা জাহানারা ইমাম এর বিরুদ্ধে পর্যন্ত এরা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছে। এত কিছু , বার বার এত অপমান যখন এরা করতে পেরেছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ আর প্রিয় বাংলাদেশটার , তখন কোটি কোটি বাঙ্গালির প্রানের দাবি যুদ্ধাপরাধীর ফাসির দাবিকে উপেক্ষা করে বিরুদ্ধাচরন করাই এদের পক্ষে স্বাভাবিক । আমাদেরকে মনে রাখতে হবে , আমাদের বাংলাদেশটার জন্ম মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। তাই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাঁড়ানো আমাদের পবিত্র কর্তব্য। মনে রাখতে হবে আমাদের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান , আমাদের মা শহীদজননী জাহানারা ইমাম , আমাদের ধমনীতে বইছে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ বীরাঙ্গনার রক্ত। তাই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি যেভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াক না কেন , আমাদের লক্ষ্য হল - রাজাকারের ফাসি আদায় করে নেয়া আর সেজন্যই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে জামাত -শিবির - বি এন পি -স্বাধীনতাবিরোধী সব অপশক্তির বিরুদ্ধে। স্বাধীন বাংলার মাটিতে মুক্তিযুদ্ধের বিয়াল্লিশ বছর পর আবার বিজয় আনন্দে মেতে ওঠার অপেক্ষা এখন । কয়েকদিন ধরে দেখছি কসাই কাদেরের ফাসি নাকি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে হওয়ার কথা । পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পেলেই ফাসি কার্যকর করবে কারাগার কর্তৃপক্ষ । কাজেই , আমরা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সেই ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছিলাম তার চূড়ান্ত বিজয় হয়ত দেখতে পাব , কসাই কাদেরের ফাসির আনন্দে মা জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলিকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে পারব - মা , তোমার কথা আমরা রেখেছি । ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ বীরাঙ্গনা মা কে কিংবা এখনও কালের সাক্ষী হয়ে বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের হাত ধরে বলতে পারব- আমরা তোমাদের ভুলি নি , ভুলবো না । জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু। জয় প্রজন্ম , জয় শহীদজননী , জয় গনজাগরন মঞ্চ। জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।
Posted on: Fri, 25 Oct 2013 08:03:33 +0000
Trending Topics
Recently Viewed Topics
© 2015