ইসলাম বিদ্বেষী শক্তির মোকাবেলায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের জন্য নবীপ্রেমিক জনতা প্রস্তুত : শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ পবিত্র মদিনা মুনাওয়ারা শাখার এক সম্মেলন শনিবার বাদ আছর ওয়েস্টার্ন হারেসিয়া হোটেলে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর, কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর চেয়ারম্যান, দারুল উলূম হাটহাজারীর মুহতামিম, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী। মদিনা শাখার সভাপতি মাওলানা সাইয়েদ রফিকুল ইসলাম মাদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা হাফেজ মুজ্জাম্মেল হক, মাওলানা মসিহুল্লাহ, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা সুফিয়ান আনিস, মুফতি মাসুম বিল্লাহ ফিরোজী, মাওলানা আজিজ ফোরকান আল মাদানী, হাফেজ বশির, হাফেজ শাহাদাত, মাওলানা মোজ্জাম্মেল প্রমুখ প্রবাসী ওলামায়ে কেরাম ও সুধীবৃন্দ। সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, আজ গোটা মুসলিম উম্মাহ্ ইয়াহুদী-খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর বহুমুখী আগ্রাসনের শিকার। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র মুসলমানরা ইসলাম বিদ্বেষী শাসকগোষ্ঠীর হাতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কেবল ঈমান ও ইসলামের ধারক-বাহক ও তাওহীদ-রিসালতে বিশ্বাসী হবার কারণে আরাকান, ফিলিস্তিন,কাশ্মীর, আফগানিস্তানসহ বাংলাদেশের মতো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামের দুশমনরা মুসলমানদের রক্ত নিয়ে খেলছে। আমাদের ঈমান-আকীদা, সভ্যতা-সংস্কৃতি ধ্বংস করে দেবার নানামুখী চক্রান্ত চলছে। আল্লাহর রাসূলের পূর্ণাঙ্গ সুন্নাতের অনুসারীদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়নের স্টিমরোলার চলছে। কিন্তু হতাশ হবার কোনো কারণ নেই।কারণ এই বাস্তবতার পাশাপাশি আমরা দেখতে পাচ্ছি দুনিয়ার নানা প্রান্তে ইসলামের বিজয় সূচিত হচ্ছে। তরুণ-যুবক সহ নানা বয়সের মানুষ ঈমানী বলে বলিয়ান হয়ে তাগুতের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আল¬ামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, ইসলামের শত্রুরা ভেবেছিল, বিগত ৫ মে শাপলা চত্বরে লাখো জনতার মহা সমাবেশে বাতি নিভিয়ে রাতের অন্ধকারে গণহত্যা চালিয়ে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে কিন্তু তাদের আকাnক্ষা কখনও পূরণ হবে না। নবীপ্রেমিক তাওহীদি জনতা ইতোমধ্যে গোটা দেশে বহুগুণ ঈমানী শক্তি নিয়ে আরও বৃহৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। সারা বাংলাদেশে অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। নবীপ্রেমিক তাওহীদি জনতার এই মহাজাগরণ ঠেকানোর শক্তি কারও নেই। কারণ মুসলমানরা আল্লাহ ছাড়া কারও সামনে মাথা নতকরে না। বদর, ওহুদ, হোনাইন,তাবুকসহ যতবার ইসলামবিরোধী শক্তি মুসলমানদের নির্মূল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে আল্লাহর সাহায্য ও শোহাদায়ে কেরামের রক্তের বদৌলতে ইসলামের বিজয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরাম ভারত উপমহাদেশকে ঔপনিবেশিক বৃটিশ শক্তির কাছ থেকে মুক্ত করার জন্যশাহ্ ওয়ালিউল¬াহ মুহাদ্দেসে দেহলভী (রাহ.) এর সময়কাল থেকে যুগযুগ ধরে বহু ত্যাগ ও কুরবানীর নজরানা পেশ করেছে। বালাকোটের ময়দানে সাইয়েদ আহমদ শহীদ বেরলভীর নেতৃত্বে হাজারো মুসলমান শাহাদত বরণ করেছেন, রক্ত দিয়েছেন। শামেলির যুদ্ধে জীবনবাজি রেখেছেন। আন্দামান দ্বীপে হাজারো আলিমকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে এতো নির্যাতনের মুখেও আমাদের পূর্বসূরী ওলামায়ে কেরাম একচুলও পিছপা হননি। হুজ্জাতুল ইসলাম কাসেম নানুতুভী (রাহ.) দারুল উলুম দেওবন্দপ্রতিষ্ঠা করে এই আন্দোলন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কেয়ামত পর্যন্ত নাস্তিক্যবাদী ইসলাম বিদ্বেষী শক্তির মোকাবেলায় দেওবন্দি ওলামায়ে কেরাম সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছেন। আমীরে হেফাজত আল্লামা আহমদ শফী বলেন, আমাদের অসংখ্য আলিম-হাফেজ, মুফতি-মুহাদ্দিস, ছাত্র ওনবীপ্রেমিক জনতাকে বর্তমান সরকার যৌথবাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে শহীদ করেছে। শত শত মানুষ পঙ্গুএবং চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে গেছেন। হাজার হাজার মানুষ সেদিন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে আমরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দিতে পারিনি। শোহাদায়ে কেরাম ও আহতদের জন্য চিকিৎসা ফান্ডে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য তিনি প্রবাসী ওলামায়ে কেরাম ওধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি আহবান জানান। সম্মেলন শেষে আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বাংলাদেশের মুসলমানদের ইজ্জত-আব্রু রক্ষা, ৫ মে গণহত্যা আহতদের সুস্থতা কামনা ও শহীদদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মুনাজাত করেন।
Posted on: Sat, 06 Jul 2013 17:32:26 +0000
Trending Topics
Recently Viewed Topics
© 2015