এক দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের - TopicsExpress



          

এক দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনের নাম অ্যাডলফ হিটলার। কৈশর পেরিয়ে যৌবনে পা দেয়ার আগেই অর্থাৎ ১৬ বছরের কোটা পেরুবার আগেই বাবা- মাকে হারিয়ে এক ছন্ন ছাড়া জীবনের মুখোমুখি হতে হয় এই মানুষটিকে। দু’বেলা দু’মুঠো মোটা ভাত মোটা কাপড়ের জন্য কতই না সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে ভিয়েনার পথে প্রান্তরে। অভাব-অনটনের এই কষ্টের দিনগুলো সম্পর্কে হিটলার নিজেই তার বিখ্যাত মাইন ক্যাম্পফ (Mein Kampf) গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে “Years of Study and Sufferings in Vienna” অর্থাৎ “অধ্যয়ন ও ভিয়েনায় যন্ত্রনাময় বছরগুলো”- এই শিরোনামে লিখেছেন, “Five years of poverty in that Phaecian town in which, first as a casual laborer and then as a painter of little trifles, I had to earn my daily bread. And a meagre morsel indeed it was, not even sufficient to still the hunger which never left me but took part in everything I did. Every book that I bought meant renewed hunger, and every visit I paid to the opera, meant the intrusion of that inalienable companion during the following days”. অর্থাৎ “এই পাঁচ বছরে কখনও মজুর হিসেবে কাজ করতে হয়েছে অথবা বাণিজ্যিক ছবি এঁকে খাদ্যের জোগাড় করতে হয়েছে আমাকে। সেই খাদ্যও আমার পেট ভরানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। সব সময়ই ক্ষুধা আমাকে তাড়া করে ফিরেছে। সেই সময় একটা বই কেনা বা একদিন অপেরায় যাওয়ার অর্থ হলো পরবর্তী কয়েকদিন ক্ষুধার আগুনটাকে আরও তীব্রবেগে জ্বালিয়ে তোলা”। তীব্র অভাব অনটনের মধ্যে কৈশোর থেকে যৌবনে পা বাড়ানোর এই সংকটময় মুহুর্তেও হিটলার তার অধ্যয়ন থেকে গাফেল থাকেননি। এ সময়ের গভীর অধ্যয়নই তাকে বাস্তবধর্মী চরিত্র অর্জনে সহায়তা করে। পাশাপাশি ইতিহাসের গভীরে প্রবেশ করে অতীতের দৃষ্টিতে বর্তমানকে মূল্যায়ন ও জীবনকে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই সময় থেকেই হিটলার যথেষ্ট পরিপক্কতার পরিচয় দিতে সক্ষম হন। হিটলার তার বইয়ের একই অধ্যায়ে আরও লিখেছেন, “From this point of view fate had been kind to me. Circumstances forced me to return to that world of poverty and economic insecurity above which my father had raised himself in his early days; and thus the blinkers of a narrow petit bourgeois education were torn from my eyes. Now for the first time I learned to know men and I learned to distinguish between empty appearances or brutal manners and the real inner nature of the people who outwardly appeared thus”. অর্থাৎ “এক হিসেবে বলতে গেলে আমার ভাগ্য ভালোই ছিল। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমার বাবা তার ছেলেবেলায় যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন, ঠিক তেমনই নিদারুন দারিদ্রের কষাঘাত আর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে সেদিন আমার চোখের সামনে বুর্জোয়া জীবনের রঙিন ছবিটা টুকরো- টুকরো হয়ে ভেঙ্গে পড়েছিল। আর বুর্জোয়া শিক্ষার মূলে যে সংকীর্ণতা রয়েছে তা আমার দৃষ্টির সামনে প্রতিভাত হয়েছিল। জীবনে এই প্রথম আমি দাম্ভিক আর সাধারণ লোকদের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে শিখি। অনেক কাছ থেকে মানুষের প্রকৃত চরিত্র উপলব্ধি করতে শিখি”। হিটলার এভাবেই ধীরে ধীরে সমাজের কোন কোন জায়গায় শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে তা বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারেন। সমাজ ও দেশ সেবার নামে যেখানেই কোন ভন্ডামি হতো তা বেশ ভালোভাবেই ধরে ফেলতে সক্ষম হন হিটলার। তিনিও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোন চাপের মুখে কখনো নতি স্বীকার করবেন না। সর্বদা তিনি তার বিবেকের পরামর্শে প্রতিটি পদক্ষেপ নিবেন। এ ব্যাপারে হিটলার নিজেই তার বইয়ে একই অধ্যায়ে আরও লিখেছেন, “During those fourteen days, I came to know my fellow workmen better, and no power in the world could have moved me to join an organization (trade union) whose representatives had meanwhile shown themselves in a light which I found so unfavorable…I decided to consult the source from which my interlocutors claimed to have drawn their so-called wisdom. I devoured book after book, pamphlet after pamphlet”. অর্থাৎ “এই দুই সপ্তাহ আমি আমার সহকর্মীদের আরও ভালোভাবে বুঝতে পারলাম। আমি দৃঢ়ভাবে সিদ্ধান্ত নিলাম, পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নেই যা আমাকে ট্রেড ইউনিয়নে যোগ দিতে বাধ্য করতে পারে। কারণ তাদের স্বরুপটা ভালোভাবেই এখন আমি বুঝতে সক্ষম হয়েছি… আমি স্থির করলাম ওরা যেখান থেকে ওদের তথাকথিত জ্ঞান বুদ্ধি আহরণ করে, সেই জায়গাগুলোর খোঁজখবর আমাকে রাখতে হবে। সুতরাং আমি বইয়ের পর বই এবং পত্র-পত্রিকার সমুদ্রে ডুব মারলাম”। এমনকী তৎকালীন গণমাধ্যমে যেসব খবর ছাপা হতো সে ব্যাপারেও হিটলারেরও ছিল সতর্ক দৃষ্টি। তিনি পত্রিকাগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে পড়তেন এবং সমাজের বাস্তব অবস্থার সাথে পত্রিকার খবরের সত্যতা মিলিয়ে দেখতেন অত্যন্ত সচেতনভাবে। মাইন ক্যাম্পফ বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে হিটলার আরও লিখেছেন, “These journalists were real virtuosos in the art of twisting facts and presenting them in a deceptive form. The theoretical literature was intended for the simpletons of the soi- disant intellectuals belonging to the middle and, naturally, the upper classes. The newspaper propaganda was intended for the masses”. অর্থাৎ “সাংবাদিকরা তাদের পত্রিকায় সংবাদ এমন চতুরতার সঙ্গে পরিবেশন করতো, যাতে সত্যিকারের ঘটনা বোঝা কারও পক্ষেই সম্ভব ছিল না। আর এই পুঁথিগত তথ্য নিয়ে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ সম্প্রদায় যারা নিজেদের বুদ্ধিমান ভাবতো তারা আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতো। এই সংবাদপত্রগুলো জনগণের কাছে মিথ্যা প্রচার ছাড়া আর কিছুই ছিল না”। শুধু সমাজ বা রাষ্ট্রে বিদ্যমান অন্যায়, অবিচার ও অসঙ্গতিই নয়, জীবনের অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়েও হিটলারের উপলব্ধি ছিল অত্যন্ত তীক্ষ্ম। মাইন ক্যাম্পফ বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের শেষের দিকে হিটলার লিখেছেন, “The psyche of the broad masses is accessible only to what is strong and uncompromising. Like a woman whose inner sensibilities are not so much under the sway of abstract reasoning but are always subject to the influence of a vague emotional longing for the strength that completes her being…” অর্থাৎ “বিপুল জনগোষ্ঠীকে কেবলমাত্র দৃঢ় ও আপোষহীন মনের মাধ্যমেই মাপা যায়। যেমন মেয়েদের অন্তর এতটাই নিরস যে, কোন যুক্তিসংগত কারণেও তা খুব একটা দোলা দেয় না। অথচ অন্ত:সারশূন্য মিথ্যা আবেগে প্রায়ই তারা তাদের সমস্ত শক্তি নি:শেষ করে দেয়”। সম্ভবত মূল আলোচনার বাইরে হিটলার সম্পর্কে একটু বেশি আলোকপাত করা হচ্ছে। তবে আমার বিশ্বাস হিটলার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানা একান্ত জরুরী। কেননা হিটলার আসলে কেমন ছিলেন? কোন ধরনের মন- মানসিকতা নিয়ে তার বেড়ে ওঠা তা সঠিকভাবে না জানলে তার ইহুদী বিদ্বেষের বিষয়টিও আসল তাৎপর্য উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। নিশ্চয়ই সচেতন পাঠনকরা এখন অন্ততপক্ষে এতটুকু সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন যে, হিটলার তার সমকালীন সমাজব্যবস্থা ও রাজনীতি সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। শুধু তাই নয় ইতিহাস সম্পর্কেও তার ছিল অগাধ অধ্যয়ন ও জ্ঞান। তাই ইহুদীদের সম্পর্কেও নিশ্চয়ই তার অমূলক কোন ধারনা ছিল না। সহজ কথায় ইহুদীদের সাথে যে নিষ্ঠুর ব্যাবহারটি তিনি করেছেন তার পেছনে নিশ্চয়ই কোন না কোন উপযুক্ত কারণ বিদ্যমান ছিল। ইহুদীবাদকে নতুনরুপে জাগরুক করার প্রত্যয় নিয়ে ইহুদীরা যেই যাত্রা (জিয়ানিজম বিপ্লব) পঞ্চাশের দশক থেকে জোরে শোরে শুরু করে সে সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে হিটলার তার মাইন ক্যাম্পফ বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে আরও লিখেছেন, “To outward appearances it seemed as if only one group of Jews championed this movement, while the great majority disapproved of it, or even repudiated it. But an investigation of the situation showed that those outward appearances were purposely misleading…” অর্থাৎ “বাইরে থেকে দেখলে হঠাৎ মনে হবে যে, ইহুদীদের একটি দলই বোধহয় এই সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে চলছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ ইহুদীই এর বিপক্ষে বা একে বর্জন করেছে। কিন্তু বিষদ পর্যবেক্ষণের পর বুঝতে পারি যে এই আচরণ সম্পূর্ণ ব্যাপারটাকে ধোঁকা দেয়ার জন্যে।” ইহুদীদের এই আসল চরিত্র হিটলারের চোখে যখন ধরা পড়ে তখনও তিনি কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পন করেননি। এই বয়সেই হিটলার ইহুদীদের কুটকৌশলগুলো এতটাই সুচারুরুপে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে ছয় দশক পরেও বর্তমান ইহুদীদের কার্যকলাপ পর্যালোচনা করলে তার সত্যতা মিলে। কিশোর বয়সে ইহুদীদের চরিত্রের যে দিকগুলো হিটলার বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন তা যে কতটা নিখুঁত ছিল বর্তমানে ফিলিস্তিনে ইহুদীদের আগ্রাসী তৎপরতা ও সে ব্যাপারে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার কিছু কুট-কৌশল পর্যালোচনা করলেই তা পরিস্কার হয়ে যায়। এই ধারাবাহিক প্রতিবেদনের তৃতীয় পর্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরার প্রয়াস রেখে দ্বিতীয় কিস্তির এখানেই সমাপ্তি টানলাম। .......copy
Posted on: Tue, 22 Jul 2014 05:15:12 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015