নটর ডেম কলেজে পড়া - TopicsExpress



          

নটর ডেম কলেজে পড়া অবস্থায় চাকুরীজীবী এক বড় ভাইয়ের সাথে থাকতাম। মাশাল্লাহ বড় ভাই মোটামুটি ইসলামী জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। ইসলামী জ্ঞানের অধিকারী হলেও তিনি আবার একটু বেশী আধুনিক(??) ছিলেন। মানে তিনি মাঝে মাঝে হিন্দি সিনেমাও দেখতেন। তিনি আবার হিন্দি সিনেমার নায়িকা শ্রীদেবীর বড় রকমের ফ্যান ছিলেন। উনার কথা হইলো, শ্রীদেবীর তিনটা বিয়ের পরেও উনি শ্রীদেবীকে বিয়ে করতে রাজী। আসলে এই কথা দ্বারা তিনি যা বুঝাতে চাইতেন সেটা হলো- শ্রীদেবীর শারীরিক সৌন্দর্যের তীব্রতা। নটর ডেম কলেজে পড়া অবস্থায় আমি নিজেও যখন দিব্বা ভারতীকে ( ৯০ দশকের হিন্দি ছবির একজন নায়িকা) প্রথম দেখি তখন সত্যিই আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে, একটা মানুষ এতো সুন্দর হয় কিভাবে!! আমি নিজেও দিব্বা ভারতীর একজন বড় রকমের ফ্যান হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে যখন শুনলাম দিব্বা ভারতী এখন বেঁচে নেই, আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছে (কেউ বলে মেরে ফেলা হয়েছে) তখন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আসলে শ্রীদেবী, দিব্বা ভারতী, জুহি চাওলা, এরা এক সময় অনেক যুবকের স্বপ্নের নায়িকা ছিলেন শুধুমাত্র তাঁদের শারীরিক সৌন্দর্যের কারণে। কিন্তু এখন আর কেউ ভুলেও ওদের নাম খুব একটা নেয় না কারণ তাঁদের শারীরিক সৌন্দর্য আর আগের মতো নেই, তাঁদের শারীরিক সৌন্দর্যে ভাঁটা পড়েছে, এখন আর মানুষকে খুব একটা মুগ্ধ করে না। আসলে যা বলতে চাচ্ছিলাম সেটা হলো-শারীরিক সৌন্দর্য খুব ক্ষণস্থায়ী একটা জিনিস। একটা নির্দিষ্ট সময় পর এটা হারিয়ে যায়, চাইলেও আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। ক্ষণস্থায়ী এই শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে গৌরব করার কিছু নেই। এটা আল্লাহ্‌র একটা নেয়ামত মাত্র। বলতে পারেন পরীক্ষার একটা উপকরণও। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় হচ্ছে-আমাদের মা-বোনেরা এই ক্ষণস্থায়ী সৌন্দর্যকে প্রদর্শনের জন্যে এক নীরব প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। কে নিজেকে কতো সুন্দর এবং আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করবেন- এই প্রতিযোগিতা। তাইতো আজ রাস্তার পাশে ব্যঙয়ের ছাতার মতো গড়ে উঠছে বিউটি পার্লার আর আমাদের মা বোনেরা এইসব বিউটি পার্লারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন শুধুমাত্র নিজেদেরকে একটু আকর্ষণীয়রূপে উপস্থাপনের জন্যে। যাইহোক আগামী পরশু থেকেই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রামাদান। সবারই মন একটু নরম হয়ে আসবে, পরকালের কথা মনে আসবে। গত এক বছরের ভুল-ভ্রান্তি, পাপের জন্যে আল্লাহ্‌র দরবারে ক্ষমা চাইবে। আমাদের যেসব মা বোনেরা সাধারণত বেপর্দায় চলাফেরা করেন তারাও কিছুটা পর্দা করতে চেষ্টা করবেন, যারা আগে ঠিক মতো কাপড়ও পড়তেন না, তারাও মাথায় কাপড় দিবেন, ঘুমটা দিবেন। আলহামদুলিল্লাহ্‌। -আশা করি আমাদের মা-বোনদের ভিতরে এই মহান পরিবর্তনটা যেন রামাদান শেষ হওয়ার সাথে সাথেই শেষ না হয়ে যায়, বছরের বাকি দিনগুলোতেও যেন তারা এই পরিবর্তনটি ধরে রাখতে পারেন-এই দোয়া করি। আল্লাহ্‌ তাঁদের সহায় হোন। আমীন।
Posted on: Tue, 09 Jul 2013 16:17:45 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015