সিগারেট খাওয়া নিয়ে কিছু - TopicsExpress



          

সিগারেট খাওয়া নিয়ে কিছু কথা বলব আপনাদের। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। হয়ত এগুলো জানলে এই অভ্যাশটি ছাড়তে পারবেন। আমি আপনাদের কয়েকটি জিনিস YOUTUBE এ দেখে নিতে অনুরোধ করব, যদি আপনি সত্যি সত্যি ব্যাপারগুলো বুঝতে চান। এগুলো বুঝার জন্য ডাক্তার হতে হবে না, শিক্ষিত হলেই হবে। সবার বোঝার সুবিধার্থে তথ্যগুলো নেওয়া হয়েছে মুলত University Of Cambridge Curriculum(UK) এর O & A Level এর Biology বই থেকে। সিগারেট খেলে কি ক্যান্সার হয়? হ্যা, হতে পারে। হবেই, এটা বলা যাবেনা। ১০০০ জন লোক সিগারেট খায়। তাদের মধ্যে ৬০ জনের ফুসফুস ক্যান্সার হল। আর ১০০০ জন লোক সিগারেট খায় না। তাদের মধ্যে ৫ জনের ফুসফুস ক্যান্সার হল। আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। Smokers are many times more riskful to develop Lung Cancer in comparison with Non-smokers. তবে ক্যান্সার হলো তো হল, আপনি মরে গেলেন। কিন্তু সিগারেট আপনার শরীরের এমন কতগুলো ক্ষতি করছে যে আপনি হয়ত মরবেন না, কিন্তু আপনি সুস্থভাবে বাচঁতে পারবেন না কোনদিন। আসুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক। সিগারেট এর ধোয়া সরাসরি যায় ফুসফুসে। সেখান থেকে রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সবচে বেশি ক্ষতি লাংস এর হলেও সারা শরীরে এর প্রভাব আছে( হার্ট, রক্তনালী)। সিগারেট এর মূল উপাদান ৩টি তা হল- TAR( আলকাতরা) , CO ( কার্বন মনো-অক্সাইড) , আর Nicotine ( এটি-ই সিগারেটের মূল DRUG) এছাড়াও একেকটি সিগারেটে থাকে ৪০০০ এর মতন আলাদা আলাদা Chemical Compounds, যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো-ই ক্যান্সার এর জন্য দায়ী। এর মধ্যে বাথরুম মাজার কেমিক্যাল ও আছে ! ১- TAR/ আলকাতরা - আলকাতরা দিয়ে রাস্তা লেপা হয়। টিনের চাল লেপা হয়। আর সিগারেট এ আলকাতরা আছে। এটি একটি বিষাক্ত জিনিস ( any doubt ?) যা আপনার ফুসফুসের ভিতরে দিন দিন আস্তে আস্তে জমা হয়। আমাদের ২টি লাংস এর ভিতরে রয়েছে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ( ৬০ কোটি) ছোট ছোট বেলুনের মতন জিনিস, এগুলার নাম Alveoli ( অ্যালভিয়োলাই) . এদের গায়ে আছে আরো কোটি কোটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রক্তনালী ( Alveolar Capillary). আমরা নাক দিয়ে যে শ্বাস নেই তা এই Alveous এর মধ্যে যায়, সেখান থেকে রক্তে মিশে, সেখান থেকে শরীরের সবগুলো কোষ এ যায়। কোষ এই অক্সিজেন ব্যবহার করে বেচে থাকে, বদলে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরী হয়, সেটা আমরা বের করে দেই। TAR একটি Irritant Chemical. আমাদের শ্বাসপ্রশ্বাস এর যে সিস্টেমটা আছে ( Respiratory sytem) এটার ভিতর Cilia নামে একরকম ঘাসের এর মতন জিনিস আছে যারা সবসময় নড়াচড়া করে ও বাতাসের ময়লা Trap করে। TAR এই cilia গুলোকে নষ্ট করে দেয়। ফলে ফুসফুসের ভিতরে আস্তে আস্তে ময়লা, ব্যাক্টেরিয়া জমতে থাকে, এবং ভিতরে ইনফেকশন তৈরী হয়, জন্ম নেয় একটি রোগ, যার নাম ব্রঙ্কাইটিস ( Bronchitis/ Also known as Chronic Obstructive Pulmonary Disease- COPD) . এই আলকাতরা আপনার Alveolus গুলোকে আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেয়। এটা একদিনে হয় না, বছরের পর বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। প্রতি বছর ধূমপানের ফলে আপনার ফুসফুসে ২০০ মিলি. আলকাতরা জমে(WHO) . ফলে আপনার রক্তে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষমতা দিন দিন কমতে থাকে। এবং আপনার Alveolus এর সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকে। সবচে খারাপ কথা হল যে এই ক্ষতি IRREVERSIBLE, তার মানে যা হয়ে গেছে তা আপনি ফেরত পাবেন না, বাকি যা আছে তা দিয়েই আপনাকে চলতে হবে। Youtube & Google এ দেখে নিবেন - Smokers lung, Human respiratory system, Lung alveoli, Bronchitis, COPD ২- CO/ কার্বন মনো-অক্সাইড - এটি এত বিষাক্ত একটি গ্যাস যে বিশুদ্ধ কার্বন মনো-অক্সাইড এ মাত্র কয়েক মিনিট থাকলে মানুষ মারা যাবে। সিগারেটের ধোয়ায় এই বিষ আছে, কিন্তু তা থেকে মানুষ মরে না কারন ধোয়াটা বাতাসের সাথে মিশে "Dilute/Masking" হয়ে যায় এবং তার % কমে আসে। এছাড়াও ধূমপানের সময় মানুষ নাক দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নেয়, কাজেই সে মরে না। এই ধোয়া কি ক্ষতি করে? আসুন অঙ্কের হিসাব দেই। আপনার একবার হলেও চিন্তা হবে । আমাদের শরীরে ৫ লিটার রক্ত আছে। এদের মধ্যে আছে লোহিত রক্ত-কনা, বা red blood cell(rbc), এরাই অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যায় সব কোষ এ। ১ লিটার=১ লক্ষ মাইক্রোলিটার ( ১,০০,০০০) প্রতি মাইক্রোলিটার এ লোহিত রক্ত-কনা আছে ৬ মিলিয়ন, বা ৬০ লক্ষ। তাহলে পুরো শরীরে লোহিত রক্ত-কনা আছে = ৬০ লক্ষ X ১০০০০০ X ৫ = ৩000000000000 বা ৩ লক্ষ কোটি। প্রত্যেকটি লোহিত রক্ত-কনা তে ২৫ কোটি হিমোগ্লোবিন (hemoglobin) আছে। প্রত্যেকটি হিমোগ্লোবিন ৪টি করে অক্সিজেন বহন করতে পারে। তাহলে প্রত্যেকটি লোহিত রক্ত-কনা ১০০ কোটি অক্সিজেন বহন করে একেকবারে। ( এবার এটাকে ৩ লক্ষ কোটি দিয়ে গুন করে দেখতে পারেন) অক্সিজেন যত দ্রুত হিমোগ্লোবিন এর সাথে জোড়া লাগে, কার্বন মনো-অক্সাইড তার ২৫০ গুন বেশি গতিতে হিমোগ্লোবিন এর সাথে জোড়া লাগে। ফলে কার্বন মনো-অক্সাইড রক্তে আসা মাত্রই তারা অক্সিজেন এর যায়গা দখল করে নেয় অত্যন্ত কম সময়ে। একজন ধূমপায়ীর রক্তের ১/৫ অংশ দখল করে নেয় কার্বন মনো-অক্সাইড । ফলাফল - উপরের বিশাল সংখ্যা দেখে বুঝতে পারছেন শরীরের ভিতরে কি ঘটে সর্বদা। শরীরের কোষগুলো অক্সিজেন চায় বাচার জন্য, কিন্তু ধূমপানের ফলে তারা পায় কার্বন মনো-অক্সাইড। দিনের পর দিন এই ঘটনা ঘটতে থাকে। আস্তে আস্তে তারা ধ্বংস হতে থাকে। কমতে থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। Youtube : Oxygen transport in the body, effect of CO in Body. ৩- নিকোটিন/Nicotine : এটিই সেই DRUG যার জন্যে মানুষ ধূমপান করে। Nicotine কে এখন ড্রাগ বলা হয়, কারন এটি একটি নেশা। তাই ধূমপান কেও এখন addiction বলা হয়। যারা ধূমপান করেন, তারা addict. এটা নিয়ে আপনি তর্ক করতে পারেন, কিন্তু এটাই পরীক্ষিত সত্য এখন পৃথিবীতে। Nicotine রক্তের মাধ্যমে ব্রেইন এ যায় এবং কিছু অনুভুতির সৃষ্টি করে, এটাই নেশা। Nicotine এ আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে গেলে এটা মানুষ ছাড়তে পারেনা সহজে। Youtube : How Nicotine affects body কথা হল, এসব "ঘোড়ার ডিম" হলে আপনার কি যায় আসবে? হ্যা, আপনি নরমাল জীবন যাপন করতে পারবেন। বাজারে যেতে পারবেন, অফিস করতে পারবেন। কিন্তু একটু "Out of normal limit" কাজকর্ম যেমন দৌড়ানো, খেলাধুলা করা, যেসব কাজে ফুসফুসকে বেশি ব্যবহার করতে হয়, তা আপনি জীবনেও পারবেন না......লিখে রাখেন আমার কথা। হয়ত বলবেন " ধুর মিয়া, আমি পারি" ...পারতে পারেন, কিন্তু খুব বেশিদিন না। যারা ধূমপান করেন, তাদের জন্য, শেষ কবে ১ কিমি টানা দৌড়েছেন? একবার চেষ্টা করে দেখেন, শ্বাসকষ্ট কি জিনিস টের পাবেন। অধূমপায়ীদের বলছি, আপনি যখন আপনার ধূমপায়ী বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন, তখন আপনি হন Passive Smoker. আপনি সারা জীবন একটি সিগারেট না খেয়েও তাদের ধোয়া, C0, TAR খেয়ে চলেছেন। খুন করে ফাসিতে ঝুলবেন নাকি খুন না করে ফাসিতে ঝুলবেন ......এটা আপনার সিদ্ধান্ত ! হয় বন্ধুদের বোঝান, বা নিজের জীবন ও ধূমপায়ী বন্ধু থেকে একটি বেছে নিন। ডা: মেহেরদাদ
Posted on: Sun, 29 Sep 2013 18:50:01 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015