৯২ কোটি টাকা ফেরত দিচ্ছে - TopicsExpress



          

৯২ কোটি টাকা ফেরত দিচ্ছে না বাংলালিংক: কাল সিদ্ধান্ত নেবে বিটিআরসি টেলিকম আইন ২০০১ ভেঙ্গে চালু করা প্রমোশনাল অফারের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে আয় করা ১০০ কোটি টাকা ফেরৎ দিচ্ছেনা বাংলালিংক। তিন বছর ধরে বার বার চিঠি দেবার পরেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির নির্দেশ মানছে না অপারেটরটি। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে আগামীকাল অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। বিটিআরসির কমিশন সভার কার্যবিবরণী থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ’ডেইলি ফ্লাট ট্যারিফ’ প্রমোশনাল সার্ভিসের নামে বাংলালিংকের তুলে নেয়া ৯২ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ৫২৪ টাকা, অনুমোন ছাড়া ট্যারিফ চালু করার প্রশাসনিক জরিমানা বাবদ ১০ লাখ টাকা, একটিভ গ্রাহকদের কাছ থেকে সাবসক্রিপশন ফি বাবদ আদায় করা ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪৩ হাজার ৯৩২ টাকা এবং চার্ন গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলে নেয়া ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৬ টাকা রয়েছে। এ সব টাকা তুলে নেয়াকে বিটিআরসি বলছে-’অবৈধ’, ট্যারিফ ডিরেকটিভস অমান্য এবং টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর ৪৮ (১) এর বিধান লঙ্ঘন। ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিটিআরসি বার বার চিঠি দিয়েও টাকা উদ্ধার করতে পারেনি উল্লেখ করে বিটিআরসির একজন সিনিয়র অফিসিয়াল জানিয়েছেন, ট্যারিফ ডিরেকটিভসের লঙ্ঘন ও টাকা পরিশোধে বিটিআরসির নির্দেশনা অমান্য করায় বাংলালিংককে ১০০ কোটি টাকার প্রশাসনিক জরিমানা করতে পারে। সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর ২০১৪ বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বলেছিলেন, পরবর্তী কমিশন সভায় বাংলালিংকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সিএজি রিপোর্টে শীর্ষ অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিটিআরসির নাম আসার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে নিজ অফিসে ডাকা ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এরপর থেকে পর পর ৩ টি কমিশন সভা হলেও সেখানে বাংলালিংকের কাছ থেকে পাওনা আদায়ের বিষয়ে স্পেসিফিক কোনো এজেন্ডা ছিলনা বলে কমিশন সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিটিআরসির ১৭০ তম সভার কার্যবিরণী অনুযায়ী ২০১১ সালে বাংলালিংক কমিশনের অনুমোদন ছাড়াই জোন ভিত্তিক হোমজোন সার্ভিস চালু করেছিল। এটি কমিশনের ইনটেরিম ডিরেকটিভসের ২ নম্বরের ক্লস- Uniform tariff in a package: If a promotion package is offered , the tariff must be same for all subscribers under the same package. Tariff variation in different geographic location is not allowed under a same package | এর লঙ্ঘন। ১৭০ তম কমিশন সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, হোমজোন সার্ভিসটি বন্ধকরণ ও কারণ দর্শানোর জন্য ১৯ এপ্রিল ২০১২ কমিশন থেকে চিঠি দেবার পরেও বাংলালিংক সার্ভিসটি অব্যাহত রাখে। এ বিষয়ে সে সময় কমিশনের ১৩৮ তম সভায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার বিষয়ে আলোচনা হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। সে সময় বলা হয়েছিল এর শুনানি করার জন্য। এর আগে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বিটিআরসি ১৭ এপ্রিল ২০১৩ একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির রিপোর্টে দেখা গেছে, তদন্তের সময়ও (২০১৩ সালের মে মাসে) জোন ভিত্তিক সার্ভিসটি চালু ছিল। এ থেকে কত টাকা আয় হয়েছিল তাও বাংলালিংককে বিটিআরসি চিঠি দিয়ে বলার পরেও জানায়নি। ২০১৩ সালের শেষার্ধে এসে বাংলালিংক সেবাটি বন্ধ করেছিল। বিটিআরসির interim directives on tariff promotion অনুযায়ী ভয়েস কলের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার সাবস্ক্রিপশন ফি গ্রহণ করা যাবে না। কিন্তু ২০১১ সালের জুলাই মাসে বাংলালিংক বিটিআরসির অনুমতি ছাড়াই গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৪ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি গ্রহণ সাপেক্ষে ডেইলি ফ্লাট ট্যারিফ চালু করেছিল। ওই প্রমোশনাল সার্ভিসে যে কোনো নম্বরে মিনিট প্রতি ৬৫ পয়সায় কল করার সুযোগ দেয় অপারেটরটি। এটি টেলিযোগাযোগ আইন ২০০১ এর ৪৮ (১) এর সরাসরি লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিটিআরসি ২৩ আগস্ট ২০১২ তারিখে চিঠি দিয়ে বাংলালিংককে বলেছিল, ১ মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে প্রশাসনিক জরিমানা বাবদ ১০ লাখ টাকা এবং ডেইলি ফ্লাট ট্যারিফ প্রমোশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে আয় করা ৯২ কোটি ৩৩ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৪ টাকা পোস্ট পেইড গ্রাহকদের বিলের সাথে এবং প্রি পেইড গ্রাহকদের আইটপআপের (বাংলালিংকের নম্বরে মোবাইলফোনের মাধ্যমে রিচার্জের পদ্ধতি) মাধ্যমে ফেরৎ দিতে হবে। বিটিআরসি’র এ নির্দেশ মানেনি বাংলালিংক। ২০১৩ সালে এসেও তারা নির্দেশ না মনায় বিটিআরসির ১৪৯ তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলালিংকে ফের নোটিশ করা হয়। একই সাথে তাদের কাছ থেকে প্রমোশনাল সার্ভিস থেকে আয়ের হিসাবও চাওয়া হয়েছিল। সেটি তারা দিয়েছিল ২০১৩ সালে। পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ২০ জুলাই ২০১৩ তারিখের মধ্যে ডেইলি ফ্লাট ট্যারিফ প্রমোশন থেকে বাংলালিংকের নিজের দেয়া হিসাব অনুযায়ী সাবসক্রিপশন ফি বাবদ একটিভ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা ৫ কোটি ৯৮ রাখ ৪৩ হাজার ৯৩২ টাকা এবং চার্ন গ্রাহকদের নিকট থেকে নেয়া ৩ কোটি ৩৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৬ টাকা কমিশনে সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসাবে জমা করারও নির্দেশ দিয়েছিল। সেটিও আমলে নেয়নি অপারেটরটি। এ বষিয়ে বাংলালিংকের চীফ কমার্শিয়াল অফিসার শিহাব আহমেদ জানিয়েছেন, বিষয়টি বিটিআরসির কাছে অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে তিনি জানান।
Posted on: Wed, 14 Jan 2015 10:31:31 +0000

Recently Viewed Topics




© 2015