আঁতেল টাইপ গল্প: - TopicsExpress



          

আঁতেল টাইপ গল্প: পূর্নদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী লিখেছেন ব্লগার: জাহিদ রাজ রনি ইহা ২০৫০ সালের একটি ফেসবুকিয় প্রেমের গল্প। প্রতিটা গল্পের মতো আমাদের এ গল্পেও একজন নায়ক ও নায়িকা রয়েছেন। আমাদের গল্পের নায়কের নাম আফসার, আর নায়িকার নাম অমৃতা। ফেসবুকের কল্যানে তাদের পরিচয়। পরিচয় থেকে প্রনয়। একদিন আফসার অমৃতার ওয়ালে পোষ্ট করে বসলো “I Love u janu… ”। সেই পোষ্টে সেলিব্রেটি অমৃতার ওয়াল ভেউয়াররা অনেক লাইক কমেন্টস করলো। তা দেখে অমৃতাকে ল্যাভ করতো এমন সব ফ্রেন্ড আর ফলোয়ার’রা Dislike বাটনের জোর দাবী জানালো। এই সুযোগে বিরোধীদলীয় ষড়যন্ত্রকারীরা Dislike বাটনের মতো করে একটা Spam Link তৈরী করে পুরো ফেসবুকময় ছড়িয়ে দিলো। একদিন অমৃতা বললো, -ওগো, তুমি আমাকে এতো আদর করে ফেসবুকে Poke দাও কেনো? আমার এত্তো ভালো লাগে! তোমার poke পেয়ে আমি বারে বারে শিহরিত হই! আফসার খুশী হয়ে বললো, -আমার ঘরের দরজা খুলে দেখো, টেবিলের উপরে আমার পিসির মাউস তো শুধু তোমাকে পোক দেয়ার জন্যই! যতদিন আমার মাউস অক্ষত থাকবে, ততোদিন তোমায় দিয়ে যাবো ভালোবাসার poke প্রমিজ! যাই হোক, ভালোই চলছিলো তাদের প্রেম। সারাদিন ইনবক্স মেসেজিং, দিনে দশ বারোটা ওয়ালপোস্ট, পাঁচটা স্ট্যাটাস, একটা নোট। আহা! একেই তো বলে প্রেম! আফসারের পরিবার মেনে নিলেও হঠাত্ ঝামেলা করলো অমৃতার বাবা মা। তারা কিছুতেই এ সম্পর্ক মেনে নিলো না। তাই বাধ্য হয়ে পালিয়ে তারা বিয়ে করে ফেললো। তারা একটা গ্রুপ খুললো। Closed গ্রুপ। মেম্বার শুধু তারা দুজন। সেখানেই তারা ঘর সংসার শুরু করলো। গ্রুপের ওয়ালেই সব সাংসারিক কাজকর্ম, ভালোবাসার আদান প্রদান সম্পন্ন হতে থাকলো। একসময় তাদের পরিবারের সব লোকজন এখবর জেনে গেলো। অমৃতার মা কাদতে কাদতে বললেন, -হায়রে। আমার পোড়া কপাল। কতো ইচ্ছা ছিলো মেয়ের বিয়েতে ফেসবুকে একটা Event খুলবো। কতো লোককে Invite করবো। কিছুই হলো না রে!’ অমৃতার বাবা রেগে গিয়ে বললেন, -আমি এ বিয়ে মানি না। বিয়ের প্রমান কোথায়? বিয়ের একটা রীতিনীতি আছে। প্রোফাইলে কাছে আমি মুখ দেখাবো কীভাবে? বিয়ে করতে হলে ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ করতে হয়। সেখানে ছেলে মেয়ে উভয়পক্ষকে Confirm করতে হয়। তোমরা তা করোনি! আফসার বললো, -মাই ডিয়ার ফাদার ইন ল, আমরা তা করেছি! আপনাকে বহু আগে আমরা Block করেছি। তাই আপনি দেখেননি। অমৃতার বাবা আরো রেগে বললেন, - কি এতো বড়ো স্পর্ধা! কোথায় সেটা? আমাকে দেখাও। আফসার নিজের প্রোফাইল থেকে তাকে হিস্টোরিকাল ঐ পোস্ট দেখালো। অমৃতার বাবা অবজ্ঞার হাসি হেসে বললেন, -লোল! ঐ পোস্টে মাত্র এগারো জন লাইক দিয়েছে। এতো কম লাইকে বিয়ে সম্পন্ন হয় না। এবার আফসার চিৎকার করে উঠলো, -ফাদার ইন ল, আমাদের ফ্রেন্ডলিস্ট গরীব হতে পারে, কিন্তু আমাদের হৃদয়ে ভালোবাসা আছে। ভুলে যাবেন না, লাইক দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায় না ! অমৃতার বাবা রাগে ক্ষোভে বললেন, -ছোটলোক ফেসবুকার কোথাকার! জুকারবার্গ আমার বন্ধু। আমি এখনি তোমার নামে রিপোর্ট করাবো ! একথা শুনে অমৃতা কেঁদে ফেললো। সে কাঁদতে কাঁদতে বললো - না বাবা। নাআআআ! :’( তুমি আমার নামে রিপোর্ট করো। তবু তোমাদের জামাই এর ক্ষতি করো না। আমার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস তুমি মুছে দিও নাআআআ! তোমার দোহায় লাগে... :’( অমৃতার বাবা বললেন, -ছি! মেয়ে, তোমার এতো অধঃপতন! আমি আজই তোমাকে আমাদের ফেসবুক ফ্যামিলির Daughter লিস্ট থেকে রিমুভ করবো। অমৃতার মা, আমার ল্যাপটপটা নিয়ে এসো। অমৃতার মা ভয়ে ভয়ে ল্যাপটপ এনে দিলো। সাথে সাথে অমৃতার বাবা ফেসবুকে লগিন করার জন্য ঝাপিয়ে পড়লেন ল্যাপটপের উপর। অমৃতার মা বললেন, -ওগো তুমি শান্ত হও। তোমার ল্যাপটপের শরীর ভালো না। এতো অস্থির হলে যদি একেবারে নষ্ট হয়ে যায়! আর এদিকে আফসার অমৃতার হাত ধরে বললো, -চলো কিটি কুইন। আমরা আমাদের ছোট্ট গ্রুপে ফিরে যায়। আভিজাত্যের বড়াই থাকলে ভালোবাসা জন্মায় না। তারা ফিরে গেলো তাদের ছোট্ট গ্রুপে। এরপর একদিন হান্টার গ্রুপ অমৃতার বাবার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ফেললো। হ্যাকাররা সেই আইডি ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করতে লাগলো। এতে অমৃতার বাবার মান সম্মান ধুলোয় মিশে গেলো। কিছুদিন পরে বহুকষ্টে বন্ধু জুকারবার্গের সহায়তায় আইডি পুনঃউদ্ধারে সক্ষম হলেন তিনি। কিন্তু এরপর থেকে ডেইলী লাইক সংখ্যা কমে গেলো। অমৃতার বাবা বুঝতে পারলেন যে এতোদিন তিনি যা পেয়েছেন তা শুধুই খ্যাতি। একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনায় তার খ্যাতি শেষ হয়ে গেছে। তিনি কারো ভালোবাসা শ্রদ্ধা পাননি। আসলেই লাইক দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায় না। অমৃতার বাবা তার ভুল স্বীকার করলেন। বুকে টেনে নিলেন আফসার আর অমৃতাকে। ফ্যামিলি লিস্টে এ দুজনকে এ্যড করে নিলেন। এরপর তিনি তার বিশাল সব ফেসবুক পেজেের Adminship দিয়ে দিতে চাইলেন জামাই আফসারকে। তবে আফসার একজন আদর্শ ফেসবুকার। সে জীবনেও অমৃতা ছাড়া কোনো নারীকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেয়নি। তাই নিজ আদর্শে অটুট আফসার হাসিমুখে অমৃতার বাবার এ উপহার প্রত্যাক্ষান করলো। তারপর ফাদার ইন ল আর মাদার ইন ল কে দুখানা শ্রদ্ধা মিশ্রিত Poke দিয়ে বিদায় নিলো শুভ। তারপর সুখে শান্তিতে ছোট্ট গ্রুপে ঘর সংসার করতে লাগলো আফসার আর অমৃতা। মাঝে মাঝে এক মায়াবী সন্ধ্যায় সূর্যের বিদায়ক্ষনে গিটার হাতে অমৃতার প্রোফাইলে চোখ রেখে আফসার গেয়ে ওঠে- পড়ে না চোখের পলক! কি তোমার Pro Pic এর ঝলক! দোহাই লাগে Pro Pic তোমার একটু Hide করো! আমি মরেই যাবো ডিএ্যক্টিভেটেড হবো লগিন করাতে পারবে না কেউ! (আমি সবসময় অতিসিরীয়াস টাইপ গল্প লিখি। এই প্রথম চেষ্টা করলাম মজার কিছু লেখার। ধন্যবাদ –জাহিদ রাজ রনি)
Posted on: Mon, 19 Jan 2015 05:51:03 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015