পদত্যাগ নিয়ে এমপি রনির - TopicsExpress



          

পদত্যাগ নিয়ে এমপি রনির যত কাণ্ড ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে পেটানোর ঘটনায় দলের ভেতরে বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা বললেও আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই তা পাল্টে ফেলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পটুয়াখালীর সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার পর জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে রনি সাংবাদিকদের বলেন, দল চাইলে তিনি সংসদ সদস্যের পদ ছাড়বেন। রনি বলেন, কখনো মনে হয়েছে পদত্যাগ করি, আবার ঐ মূহুর্তেই মনে হয়েছে করব না। এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। তাই পদত্যাগ করতে পারি বলে সকালে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি। কিন্তু আমি মাননীয় স্পিকার ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলাপ- আলোচনা করেছি। এখন আমি পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের দুই প্রতিবেদক ইমতিয়াজ মোমিন ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক মহসীন মুকুলকে বেধড়ক পেটান সাংসদ গোলাম মাওলা ও তাঁর সহযোগীরা। এরপর উভযয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। এ ঘটনার পর রনি পদত্যাগ করতে পারেন বলে গুঞ্জন ওঠে। এর আগে স্পিকারের কক্ষের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার দলের একটি বড় অংশ সালমান এফ রহমানের পক্ষে কথা বলছে। এ কারণে নৈতিকভাবে আমার মনে হয়েছে আমার পদত্যাগ করা উচিত। যেহেতু এটি সাংবিধানিক বিষয়, এ কারণে আমি স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। এর দুই ঘণ্টা আগে রনির নামে এক ফেইসবুক পোস্টে লেখা হয়- Probably I am going to resign. I feel, I should face the conspiracy as general public. Our media might colored my MP post our my party. In Sha Allah, I would prove what was real fact before the picture. I would invite media personalities to make a equal level playing field for me and my opponent. Amar mukh bondho kore to onnokay sujog kore dayar modhay ar ja houk justice, transparency and democracy er nomuna hotay pare na. স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসার পর রনি বলেন, আজ পদত্যাগ করছি না। এরপর নিজের অবস্থান জানাতে সংসদ ভবনেই সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিতর্কের মুখে থাকা এই সংসদ সদস্য। পদত্যাগের সিদ্ধান্তটি ছিল সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত। আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। তবে দল যদি চায় তাহলে এখনই আমি পদত্যাগ করব। সংবিধানের ৬৭ (২) অনুচ্ছেদে বলা আছে- কোনো সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে সইযুক্ত পত্রে পদত্যাগের কথা জানাবেন এবং স্পিকার তা গ্রহণ করলে ওই সদস্যের আসন শূন্য হবে। আপনি নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে পদত্যাগের কথা ঘোষণা দিয়েও সে সিদ্ধান্ত থেকে কেন সরে আসলেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম মাওলা রনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছিল যেহেতু ঘটনা নিয়ে মামলা হয়েছে, তাই বিচার কাজ যাতে প্রভাবিত না হয়, সেজন্য পদত্যাগ করাকে শ্রেয় মনে করেছিলাম। কিন্তু আমার ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাস পড়ে আমার নির্বাচনী এলাকার প্রচুর মানুষ আমাকে ফোন করে পদত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন। রনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমার কিছু দায়বদ্ধতা আছে। তাদের সঙ্গে আলাপ না করে আমি পদত্যাগ করতে পারি না। তাছাড়া আমি একটা দলের সংসদ সদস্য। সুতরাং দলের সিদ্ধান্তও এখানে জরুরি। আমি দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করব। দল যদি মনে করে যে, আমার আচরণে দল বিব্রত, তাহলে আমি এখনি পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছি।’ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান রনি। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহের জন্য শনিবার পল্টনে রনির কার্যালয়ে গিয়ে মারধরের শিকার হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ইমতিয়াজ মমিন সনি ও ক্যামেরাম্যান মহসিন মুকুল। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সংসদ সদস্য রনি নিজেই প্রতিবেদক ও ক্যামেরাপার্সনের ওপর চড়াও হয়ে লাথি মারছেন। ঘটনার পর ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ রনিকে আসামি করে একটি মামলা করে।এরপর রনি পাল্টা মামলা করেন, যাতে দুই সংবাদিকসহ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অন্যতম মালিক ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকেও আসামি করা হয়। ইনডিপেনডেন্টের করা মামলায় রনি রোববার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। হাই কোর্ট থেকে জামিন নেন সনি ও মুকুলও। শনিবারের ঘটনার পর বেসরকারি টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা এক বিবৃতিতে রনিকে বর্জনের জন্য টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়। এছাড়া সোমবার প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা রনিকে গ্রেপ্তারের জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেন। তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলেরও দাবি জানানো হয়। সমালোচনা আসে রনির নিজের দলের ভেতর থেকেও। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, রনির ঘটনা দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্খিত। এজন্য এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সংসদ ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও হানিফ উল্লেখ করেন। অবশ্য রনি আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের নেতা নন বলেও মন্তব্য করেন হানিফ। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও সোমবার বলেন, গণমাধ্যম ও রাজনীতিবিদের সম্পর্ক অবিভাজ্য ও অবিচ্ছেদ্য। গণমাধ্যমের প্রতি তার (রনি) এ আচরণ অশোভন ও অনভিপ্রেত। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গোলাম মাওলা রনি। তবে অল্প দিনের ভেতরেই তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার খবর আসে গণমাধ্যমে। আয়কর বিবরণীতে সম্পদের তথ্যে গড়মিল পেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর আগেও সাংবাদিকদের নিগৃহীত করার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালীর এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে পটুয়াখালীর গলাচিপায় নদী দখল করে বিপণী বিতান তৈরির কথা বিভিন্ন দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে রনির সমর্থকদের হাতে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক নিগৃহীত হন। পরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাও করেন তিনি। তবে তিনি আলোচনায় আসেন সৈয়দ আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব পাওয়া নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ‘গল্প’ বলে। ওই গল্পে তিনি হাস্যরস করে বলেন, দৌড় জিতে মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন আবুল হোসেন! eimatro
Posted on: Tue, 23 Jul 2013 18:31:22 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015