বন্ধু ফাহিম। কলেজে - TopicsExpress



          

বন্ধু ফাহিম। কলেজে আমাদের সিট ছিল ফিক্সড। আমার ঠিক পিছনের বেঞ্চেই বসতো। নটর ডেমের ডিবেটিং ক্লাব খুব জনপ্রিয়। আর সে ক্লাবের জনপ্রিয় মুখ ছিল ফাহিম। বিশেষ করে রম্য আর ইংলিশ বিতর্কে চরম ট্যালেন্ট ছিল...Model United Nations এর মেম্বার ও ফাহিম। সেখানে আবার Outstanding Delegation ও পাইছে :) ... ... তো পোলাটারে প্রায়ই হিংসা হতো নানা কারনে। আজকে ভিকারুন্নেসা মাতিয়ে আসে তো, কাল রাজউক কলেজ জয়। পরশু যায় সিটি কলেজে। খুব স্মার্ট হওয়ায় মেয়েদের কাছেও ব্যাপক হিট... ... আমাদের কলেজে যারা এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিস করতো, তাদেরকে অনেক ছাড় দেওয়া হতো। ফাহিমও ছাড় পেতো। তবে ম্যাথ ল্যাবে যে ফাস্ট গ্রাফ আকতে পারতো, তা সত্যি আমাদের অবাক করতো।। একবার কলেজে Spelling contest হলো। সেখানেও Spelling master হলো ফাহিমই !!! তো কলেজে থাকতে আমরা যাদের চাল্লু মাল বলতাম, তাদের উদাহরন দিতাম ফাহিম কে দিয়ে... ... পাস করার পর যে যার মতো ছড়িয়ে গেলাম। আমাদের চাল্লু মাল চলে গেলো আমেরিকা। দেখলাম এর মধ্যেই Wooster এর Economics ও Mathematics এ double major ।। ট্যালেন্টের হাঁট আর কি... ... সবাই আসলে আমাদের মতো অলস, অকর্মন্য না।। প্রবাসে বাংলাদেশী উদ্দ্যক্তারা ব্যাপক সফল হচ্ছে। ছোট থেকেই প্রচন্ড একটিভ ফাহিম ও বসে নেই। এই কয়েক বছরের মধ্যেই আমেরিকার সিলিকন ভ্যালিতেই শুরু করে দিয়েছে তার স্বপ্নের backpack । অফিস ও সিলিকান ভ্যালিতেই...এই সিলিকন ভ্যালিতে কাদের অফিস জানেন?? গুগল, ইন্টেল, এপল, ফেসবুকের মতো সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের... ... অবাক হইনি দেখেও, আমার পিছের বেঞ্চে বসা ফাহিমের সাথে এখন সরাসরি যোগাযোগ মার্ক জাকারবার্গ কিংবা পে পালের হেড এর সাথে। তারা নিজ নিজ আইডিয়া নিয়ে আলচনা করে। বন্ধু হিসেবে বেশ গর্ব হয় সত্যি... ... ফাহিম সেদিন মজা করে বলতেছিলো, আরেহ ব্যাটা এপলের স্টিভ জবসের প্রথম অফিস ছিল তো তার বাপের গ্যারেজে। আমারটা তাও কিছুটা উন্নত। আমার বাসায় :) ।। নিশ্চয় ভাবছেন, ফাহিমের কাজটা কি?? যার কারনে সে এত বড় বড় লেভেলে চলাফেরা করছে?? সিলিকন ভ্যালিতে উদীয়মান উদ্যোক্তা হিসেবে সে ও তার টীম শুরু করেছে ব্যাকপ্যাক নামের এই সাইট নিয়ে পথচলা।। ধরা যাক, আপনার একটা ম্যাকবুক দরকার! ঢাকায় যেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম নিউইয়র্কে বসে আমারই বন্ধু যে দামে কিনছে তার চেয়ে প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা বেশি পড়ছে! অথবা অনেক প্রোডাক্ট আছে যেগুলো আমরা ঢাকায় পাচ্ছিই না! যাদের বন্ধু কিংবা আত্মীয় স্বজন ইউরোপ আমেরিকায় আছেন, তারা হয়তো ব্যাটে বলে মিলে গেলে সেই জিনিসটা আনিয়ে নিতে পারছেন, অনেক সময় সেই সুযোগও হচ্ছে না! আর যাদের তেমন কেউ নেই, তাদের ই-বে কিংবা আমাজনে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকছে না! এই সমস্যাকে সুযোগে পরিণত করেছে বন্ধু Fahim Masoud Aziz ! ব্যাকপ্যাক নামের এই সাইটটি যেখানে ঢুকে আপনি খুঁজে নিতে পারেন এমন কাউকে যে পৃথিবীর অন্য কোন প্রান্ত থেকে ঢাকায় আসছে কিছুদিনের মধ্যে, আর তার সাথে যোগাযোগ করে আপনি আনাতে পারবেন আপনার কাংখিত পণ্যটি! আর যারা দেশে আসছেন, ট্রাভেলার হিসেবে গ্রাহকের জন্য সাথে করে কিছু জিনিস নিয়ে এসে পেয়ে যাচ্ছেন বেশ কিছু অর্থ, যেটা দিয়ে হয়তো দেশে থাকার সময়টায় টাকা পয়সা নিয়ে আর ভাবতে হচ্ছে না আপনাকে! নিচের লিংকে গিয়ে দেখে নিতে পারেন বাংলাদেশী তরুণদের এই চমৎকার উদ্যোগটি! হয়তো খুঁজে পেতে পারেন আপনার অনেক দিনের কাংখিত পণ্যটি আগামী মাসেই হাতে পাওয়ার পথ! https://backpackbang/ ফাহিমের ভিডিওবার্তাঃ youtube/watch?v=RlgL840rIUw এবার আরো কিছু তথ্য দিই- ব্যাকপ্যাক এর মধ্যেই ৮৬ টা দেশের মধ্যে পণ্য সরবরাহে যোগাযোগ স্থাপন করছে! আর ট্রাভেলাররাও প্রচুর ট্রিপের তথ্য রেজিস্ট্রেশন করছেন, একটু খুঁজলেই আপনি হয়তো মেলাতে পারবেন এমন কাউকে যে আপনার হাতে পৌঁছে দিতে পারে আপনার অনেক দিন ধরে খুঁজতে থাকা একটা বই অথবা কোন দরকারী ডিভাইস, বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে ! আপনার সঠিক পণ্য পাওয়া ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে এতে ইতোমধ্যেই... আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই “টেক স্টার্টআপটা” অনেক দূর যাবে এবং বিশাল আকারে সফল হবে! ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে এই সাহসী প্রচেষ্টা ও সফলতা আমার বন্ধুর। ভাবতেই অসাধারণ লাগে সত্যি... একজন বাংলাদেশী হিসেবেও গর্ব হয়। এইতো কয়েকদিন আগে রয়টার্স ও ক্লাউট ওয়েবসাইট জগতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী যে ৫০ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিলো, সেখানে দুজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সুমাইয়া কাজি ও খান একাডেমির সালমান খান ছিলেন। নিশ্চিত লিখে রাখেন, আর কিছুদিনের মধ্যে এখানে আরেকজন বাংলাদেশীর নাম যুক্ত হতে যাচ্ছে, “ফাহিম মাসুদ আজিজ”।।
Posted on: Fri, 18 Jul 2014 08:12:13 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015