মার্ক এর আফিম তত্ত্ব ও - TopicsExpress



          

মার্ক এর আফিম তত্ত্ব ও আমাদের বংলা সিনেমা!!!! কার্ল মার্ক এর ধর্মের ব্যাপারে একটি তত্ত্ব আছে। তত্ত্বটি হলো -"ধর্ম হচ্ছে আফিমের মতন যা মানুষ কে পরকালের কথা বলে ইহকালের অত্যাচার, লাঞনা, দুঃখ, কষ্টের কথা ভূলিয়ে রাখে "তবে উনি ধর্মকে শোষণ মুক্তির হাতিয়ার হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি উনি দোষারোপ করেছেন ঐ সকল ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী কে যারা ধর্ম কে ব্যাবহার করে নিজ স্বার্থে। মাক্সসের এ আফিম তত্ত্ব আমাদের বাংলা সিনেমায় দারুণ ভাবে মিলে যায়! আসুন দেখি সিনেমা বা নাটক কিভাবে আমাদের মনোজগতে প্রভাব ফেলে। নাটক কিভাবে আমাদের জীবনধারা পাল্টিয়ে ফেলে আমাদের বেশী দূর যেতে হবে না, আমাদের মা -বোনেরা যারা ইন্ডিয়ান সিরিয়াল ও সিনেমার একনিষ্ঠ ভক্ত তাদের লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় কিভাবে তারা নিজের অজান্তে নিজেদের স্বকীয়তা ভূলে যাচ্ছেন! তবে আমি এখানে কথা বলবো, আমাদের দেশের বাংলা সিনেমা ও দর্শকদের উপর এর প্রভাব। সিনেমা মানুষকে বাস্তব জগৎ থেকে সরিয়ে এমন এক স্বপ্নের জগতে নিয়ে যায়, যা আদৌও আমাদের হস্তগত হবে কি না তাতে বিস্তর সন্দেহ করা যায়। সিনেমা মানুষকে ভূলিয়ে রাখার কৌশল হিসেবেও ব্যাবহার করা যায়। যেমনঃ আমেরিকার একটি জেলখানায় the shawshank redemption ছবিটির কথা। Rity hewarth এর ছবিটি কয়েদীদের বারবার দেখানো হয় কিন্তুু আশ্চর্যজনক ব্যাপার, এ নিয়ে কয়েদীদের কোন অভিযোগ নেই। কারন ঐ সিনেমায় লাস্ময়ী riter আগমন নাকি কয়েদীদের অনুভূতিতে একটা ভালো লাগা নিয়ে আসে! সপ্তম কলা হিসেবে চলচ্চিত্র এতনি একটা শক্তিশালী মাধ্যম যা মানুষের চিন্তা শক্তি বা ইচ্ছা শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে এমন সস্তা অনুভূতি বিলানোর ব্যাপারটা একটু লক্ষ্য করলে বোঝা যায় এইগুলোর target group গার্মেন্টস শ্রমিকরা বিশেষত নারী শ্রমিকরা। স্বল্প শিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত এসব নারীদের অনুভূতি নিয়ে খেলা করা আজকালকার এফডিসির পরিচালকদের পক্ষে খুবই সহজ কাজ। সপ্তাহের একটি মাত্র ছুটির দিনে এ সকল নারীরা তাদের সহকর্মী বান্ধবী বা প্রেমিকের সাথে বিনোদনের জায়গা বলতে বাস্তবতা বিবর্জিত অনুভূতীর ডিলার এই সিনেমাই বোঝে। খেয়াল. করলে দেখবেন, এই সকল নারীরা কি রকম রোমাঞ্চ. আর স্বপ্নময় জগতে ডুবে যায় যখন শাকিব খানের কোন ছবি নিয়ে আলোচনা করে! সপ্তাহের ছয় দিন -রাত -ভোর কঠোর পরিশ্রম, মাস শেষে মাত্র ৩ হাজার টাকা, পাড়ার মাস্তানদের জ্বালাতোন, আর সংসারের নুন -পান্তার সংকট সত্বেও তাদের ভালোলাগা শাকিব খান! জাগতিক সব যন্ত্রণা ভূলে তারা ডুব দেয় এই তিন ঘন্টার স্বপ্নের জগতে। মনের সকল দুঃখ কষ্ট ভূলে আবার প্রস্তুত হয় পরবর্তী ছয় দিনের বেচে থাকার অসম প্রতিযোগিতায়! এখন কথা হচ্ছে হচ্ছে এই বঞ্চিত শ্রেণীর রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, কষ্ট ভূলিয়ে রাখার দায়িত্ব কি এফডিসির? না অন্য কেউ আছে এই গেমের পিছনে? একটু খোজ নিলেই বুঝতে পারবেন এই গেমের বেনিফিশিয়ারি কারা। আমাদের হিরুদের মধ্যে শাকিব খান, অন্তর জলিল, রাজ্জাক, রুবেল সহ অনেকেই গার্মেন্টস কোম্পানির মালিক। এছাড়া প্রায় সব গার্মেন্টস কোম্পানির মালিকদের এফডিসিতে লগ্নি আছে ..মানে রথ দেখা ও কলা বেচা একসাথেই সারা গেলো আর কি! এই টেকনিক বৃটিশরা প্রথম আমাদের চা বাগানে এ্াপলাই করো, যা এখনো চা বাগান গুলোতে দেখা যায়। তবে এখানে ছবির পরিবর্তে চোলাই মদ। চা শ্রমিকরা নুন্যতম বেতনে সারা বেলা পরিশ্রম করে রাতে মদ খেয়ে বুদ হয়ে থাকে সকালে উঠে আবার কাজে ..তারা যে বঞ্চিত হচ্ছে, শোষিত হচেছ -সেইটা ভাববারই. সময় তারা পায় না বা তাদের সে সময় দেওয়া না! !!
Posted on: Mon, 15 Jul 2013 17:49:52 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015