মুসলিম দেশসমুহের - TopicsExpress



          

মুসলিম দেশসমুহের সেনাবাহিনী ঃ একটি পর্যালোচনা --------+------------+---—––––----—+---- সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠি সেনাবাহিনীর কাছে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে !! জানি না তারা কী ভেবে সেনাবাহিনীর কাছে এ দাবি জানাচ্ছে । তাই তাদের সামনে মুসলিমবিশ্বের সেনাবাহিনীর একটি স্পষ্ট ধারণা তুলে ধরতে চাই । এখানে আমরা মুসলিমবিশ্বের তিনটি বৃহত্তম সেনাবাহিনীর কথা আলোচনা করব । মিসর ঃ এদেশটির সামরিক আধা-সামরিক বাহিনীর সংখ্যা প্রায় দশ লাখ । আরববিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ এটি । তাদের সেনাবাহিনীর কীর্তি হচ্ছে, পঞ্চাশের দশকে ইখওয়ানের সমর্থন নিয়ে যখন এদেশের সেনাবাহিনী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের শাসনভার গ্রহণ করল । তখন তারা কিছুদিন ইখওয়ানি ভাইদের প্রতি সদাচরণ করল । পরে যখন সেনাপতি জামাল আব্দুন-নাসির ক্ষমতায় আসল তখন তারা ইখওয়ানের উপর চরম নির্যাতন শুরু করল । সায়্যিদ কুতুব রাহ. কে শহীদ করল । জামালের পর আনোয়ার সাদাত এসে ইসরাইলের সাথে মিত্র চুক্তি করল । তারপর হুসনি মোবারক আসল । একপর্যায়ে ক্ষমতায় আসলেন ডক্টর মুরসি । তখন একবছরের মাথায় দেশে দুটি আন্দোলন শুরু হলো । ১- তাহরীর স্কয়ারে বামপন্থীরা মুরসির পতনের দাবি তুলে । ২- নাসর সিটি ও রাবেয়ার স্কয়ারে শায়খ হাজিম সালাহ আবু ইসমাঈলের নেতৃত্বে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার দাবি তুলে । কিন্তু সেদেশের সেনাবাহিনী তাহরীরের মুরতাদদের ডাকে সাড়া দিয়ে রাবেয়াতে গণহত্যা চালালো । তাই আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর হাত ধরে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশী ভাইদের বলবো, আপনারা তো নিজেদেরকে গ্লোবাল সংগঠন বলে দাবি করেন, তাহলে আপনাদের উলাইয়াহ মিসরের ওয়ালীকে বলেন না যে, তিনি দেশের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর কাছে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার দাবি তুলতে ? তুরস্ক ঃ বিশ্বের সেরা দশ সেনাবাহিনীর একটি । যার সদস্য সংখ্যা প্রায় সাত লক্ষ ! ১৯২৪ সালে উসমানি খিলাফাহের পতন ঘটালো তুর্কি সেনাপ্রধান অভিশপ্ত কামাল পাশা । সে খলীফা আব্দুল মজিদ রাহ. কে দেশান্তরিত করল এবং খলীফার সম্পত্তি ক্রোক করল । কামাল পাশার পর যখন আদনান মেন্দারিস এসে আযানকে তুর্কি ভাষার পরিবর্তে আরবি ভাষায় দেওয়ার বৈধতা দিলেন, তখন সেদেশের সেনাবাহিনী সংবিধান লংঘনের অজুহাত তুলে তাকে চৌরাস্তায় ফাসি দিল । ১৯৯৬ সালে যখন নাজমুদ্দিন আরবাকান নির্বাচনে জয়ী হলেন, তখন এই তাগুত সেনাবাহিনী তাকে কারাগারে পাঠায় । এই সেনাবাহিনী ২০০১সালে ক্রুসেডারদের সহযোগী হয়ে আফগানিস্তানের ইমারাতে ইসলামী ধ্বংস করে । আজ অবধি এই সেনাবাহিনীর বুলেট নিরীহ নিরপরাধ আফগান শিশুর বুকে বিদ্ধ হচ্ছে । যে সেনাবাহিনীর হাতে খিলাফত ধ্বংস হল সে সেনাবাহিনী নাকি খিলাফাহ ফিরিয়ে আনবে !!! পাকিস্তান ঃ বিশ্বের সেরা দশ সেনাবাহিনীর আরেকটি নাম । যার সদস্য সংখ্যা ৬ লক্ষ ! এ সেনাবাহিনী গঠনের ইতিহাস হচ্ছে বৃটিশরা যখন সর্বপ্রথম মাদ্রাজ তামিল নাড্ডু (চেন্নাই) দখল করে । তখন সেখানকার অধিবাসীদের শস্য-ক্ষেত জ্বালিয়ে দেয় । তাদের ব্যবসার মুলধন পুড়িয়ে দেয় । তখন মানুষ অনন্যোপায় হয়ে জান বাচানোর তাগিদে কম বেতনে বৃটিশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি নেয় । ক্রমান্বয়ে সারা দেশে এদের সংখ্যা বাড়তে থাকে ! এই দেশীয় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বৃটেন টিপু সুলতানকে শহীদ করে । এদের সাহায্যেই তারা সমগ্র ভারতবর্ষ দখল করে । ১৮৫৭ সালে যখন কিছু দেশীয় সিপাহী বিদ্রোহ করে, তখন বৃটেন অন্যান্য দেশীয় সিপাহীদের মাধ্যমে এদেরকে পরাজিত করে । এরাই ৫১ হাজার আলেমকে ফাসির কাষ্ঠে ঝুলায় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এরাই বৃটেনের হয়ে বায়তুল মুকাদ্দসকে ইয়াহুদীদের হাতে তুলে দেয় । বৃটিশরা চলে যাবার পর এ সেনাবাহিনী কোনো রকমের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই আজ অবধি পাকিস্তানের ব্যারাকে শোভা পাচ্ছে । ৭১ সালে এরাই বাংলারভুমিতে ধর্ষণ-হত্যা-লুটতরাজ চালায় । তারাই আফগানিস্তানে আগ্রাসনের জন্যে পাকিস্তানের মাটি ক্রুসেডারদের পদতলে নিবেদিত করে । ডক্টর আফিয়া সিদ্দীকীকে আমেরিকার এরাই হাতে তুলে দেয় । প্রায় ৮০০ আরব মুজাহিদকে গুয়েন্তানামো বে কারাগারে পাঠায় । ইমারাতে ইসলামিয়্যাহর দশের উপরের মন্ত্রীকে পাক কারাগারে বন্দী করে ! তারা নাকি খিলাফাহ কায়েম করবে ? আর বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর কথা আর কি বলবো । আইএমএফ(ইয়াজুদ্দীন-মইনুদ্দীন-ফখরুদ্দীন) এর আমলে বুঝে নিয়েছি এরা কাদের সেনাবাহিনী ! বুবুজান এসেতো সবকিছু দিল্লীর জন্যে উজাড় করে দিলেন !! দেখান, মুসলিমবিশ্বের অন্তত একটি দেশ যারা কোনো না কোনোভাবে বিশ্বের কুফরিশক্তির গোলামি করছে না । যাদের শৈশব বেড়ে উঠেছে কুফরীশক্তির গোলামি করে । যৌবন পেরিয়েছে তাদের আজ্ঞাবহ হয়ে । তারা নাকি খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করবে ? একদল আছে মুতা-তাকিয়্যাহ নিয়ে, আরেকদল আছে হিকমাহ নিয়ে, আর আপনারা আছেন তথাকথিত নুসরা নিয়ে । কতকাল আর অন্যের নুসরা চাইবেন, এবার নিজে নুসরা করা শিখুন, নুসরা করার যে কতই ফযীলত যা নবীজীর আনসারদেরকে সম্পর্কে বলেছেন ! সেই ১৯৫৩ সাল থেকেই তো নুসরা নামক মরীচিকার পিছে দৌড়ে আসছেন, কিন্তু কই ? এখন পর্যন্ত তো একটি গ্রামেও শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন নি !! –হানীন ইলদারম
Posted on: Sun, 08 Dec 2013 03:36:36 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015